গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পশ্চিম খ-ে (প্রশিকা মোড়) তিন তলা ভবনের একটি ফ্ল্যাট থেকে আবদুর রহমান (৪০) নামে এক ব্যক্তির ঝলসানো গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের বাড়ি শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর গ্রামে তার বাবার নাম নসিমউদ্দিন।
ভবন মালিক চান মিয়ার ছেলে মজনু জানান, মাস খানেক আগে তিন তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার পূর্ব পাশের একটি ফ্ল্যাট সামিরা ও নিহত ব্যক্তি স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া নেন। ভাড়া নেওয়ার পর তারা দুজনই বসবাস করে আসছিলেন। চার থেকে পাঁচ দিন ধর ঘরের দরজা তালাবদ্ধ থাকায় সোমবার বিকালে মইয়ের সাহায্যে বারান্দা দিয়ে ফ্ল্যাটের ভেতর তোশকে মোড়ানো লাশসদৃশ্য বস্তু দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দরজা ভেঙে ভেতর ঢোকার চেষ্টা করেও পারেনি। বিষয়টি রহস্যজনক হওয়ায় ঢাকার ক্রাইম সিন ইউনিট ও গাজীপুর সিআইডিকে খবর দেওয়া হয়। পরে গাজীপুর থেকে সিআইডি পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে এবং ঢাকা থেকে আমিনুল রহমান খানের নেতৃত্বে ক্রাইম সিন ইউনিটের একটি দল, র্যাবের ডিএডি মোহাম্মদ রফিক উদ্দিনের নেতৃত্বে একাধিক টিম ঘটনাস্থলে এসে ফ্ল্যাটের শয়ন কক্ষের ভেতর তোশকে মোড়ানো বস্তাবন্দি গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে।
ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক আমিনুল রহমান খান জানান, ফ্ল্যাটের শয়ন কক্ষ থেকে তোশকে মোড়ানো লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে তোশক খুলে দুটি চটের বস্তায় ভরা ও রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় লাশ পাওয়া যায়। রশি কেটে দেখা যায় লাশ ঝলসানো এবং গলা অর্ধেকেরও বেশি অংশ কাটা। লাশ পোকা ধরা ও ঝলসানো থাকায় তা শনাক্ত করা মুশকিল হয়ে পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, ৮ থেকে ১০ দিন আগে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। তবে কী দিয়ে লাশ ঝলসানো হয়েছে তার আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে, তা পরীক্ষার করে নিশ্চিত করে বলা যাবে।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জানান, ফ্ল্যাটের কক্ষ থেকে তোশক, দুটি চটের বস্তা উদ্ধার করা হয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে নিহতের স্ত্রী সামিরার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আকতার হোসেন জানান, ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। শিগগিরই হত্যাকা-ের রহস্য উদঘাটন করা হবে।