করোনা ভাইরাস
চীন থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ১৩০ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে চীনের মূল ভূখ-েই ২ হাজার ১১৮ জন মারা গেছেন। বিশ্বব্যাপী ভাইরাসটিতে ৭৫ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের ৯৯ শতাংশই চীনের মূল ভূখ-ের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন জানিয়েছে, দেশটিতে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বুধবার আরও ১১৪ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ১১৮ জনে দাঁড়াল। এদিকে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়া করোনা ভাইরাসের কারণে প্রথম মৃত্যুর কথা জানিয়েছে। অন্যদিকে জাপানের উপকূলে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা ডায়মন্ড প্রিন্সেসের দুই যাত্রী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটির একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। প্রথমবারের মতো ডায়মন্ড প্রিন্সেসের দুই যাত্রীর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর এলো। এছাড়া ইরানেও ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এটি করোনা ভাইরাসজনিত রোগে মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম মৃত্যুর খবর।
এদিকে চীনের হেলথ কমিশন জানিয়েছে, বুধবার ৩৯৪ জনের দেহে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। এটি আগের দিনের তুলনায় অনেক কম। মঙ্গলবার দেশটিতে ১ হাজার ৭৪৯ জন সংক্রমিত হয়েছিলেন। সব মিলিয়ে দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪ হাজার ৫৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে। ২৫ জানুয়ারির পর বুধবারই সবচেয়ে কমসংখ্যক নতুন রোগী দেশটির হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে দেশটিতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমে এলেও মৃত্যুর মিছিল থামছে না। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, প্রাণঘাতী ভাইরাসটি আবারও ব্যাপক পরিসরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় একজনের মৃত্যু : করোনা ভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর খবর ঘোষণা করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটিতে এরই মধ্যে শতাধিক মানুষ প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ভাইরাস আক্রান্তদের বেশিরভাগই দিয়াগু শহর ও এর আশপাশের এলাকার বাসিন্দা। দিয়াগু শহরের এক গির্জায় আগে থেকেই ভাইরাস আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে লোকজনের মধ্যে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় দিয়াগু শহরের মেয়র বাসিন্দাদের ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
ডায়মন্ড প্রিন্সেসের দুই যাত্রীর মৃত্যু : জাপানের ইয়োকোহামা উপকূলে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা ত্রুুজ জাহাজ ডায়মন্ড প্রিন্সেসের দুই যাত্রী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। অশতীপর ওই দুই যাত্রী জাপানের বাসিন্দা ছিলেন। গেল সপ্তাহেই এ দুই যাত্রীর শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর তাদের জাহাজ থেকে নামিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মৃত দুই যাত্রীর মধ্যে একজন ৮৭ বছর বয়সি পুরুষ যাত্রী ছিলেন, যিনি হৃদরোগে ও ব্রঙ্কাইটিসে ভুগছিলেন আর ৮৪ বছর বয়সি নারী যাত্রীর মৃত্যুর কারণ নিউমোনিয়া লেখা হয়েছে। চীনের বাইরে ডায়মন্ড প্রিন্সেসেই সবচেয়ে বেশি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। জাহাজটির ছয় শতাধিক যাত্রী এরই মধ্যে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া জাহাজটিতে কাজ করতে গিয়ে জাপানের পাঁচ কর্মকর্তা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকেই প্রাণঘাতী এ ভাইরাস মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে। এরই মধ্যে এ ভাইরাস ৩০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।