সাপের বিষ নিয়ে সুখবর দিলেন বিজ্ঞানীরা। সাপের বিষে সারবে মরণব্যাধি ক্যান্সার। স্তন ক্যান্সার ও কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসায় এ বিষ ব্যবহার করা যেতে পারে বলে জানান বিজ্ঞানীরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ দুই ধরনের ক্যান্সারের কোষ দ্রুত ধ্বংস করতে সক্ষম সাপের বিষ। তবে এখনই ক্যান্সার চিকিৎসায় সাপের বিষ ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এর যথাযথতা যাচাই করতে এখনও সময়ের দরকার আছে বলে জানান তারা। ক্যান্সার চিকিৎসায় সাপের বিষ নিয়ে গবেষণা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নর্দান কলোরাডোর (ইউএনসি) একদল জীববিজ্ঞানী। তারা বলছেন, মানবরোগের চিকিৎসায় থেরাপি হিসেবে ব্যবহার হতে পারে ভেনম (সাপের বিষ), তবে এজন্য আরও গবেষণার দরকার রয়েছে। স্নেক ভেনমে উচ্চমাত্রায় বিষ রয়েছে। এর একটিমাত্র কামড়ে মুহূর্তের মধ্যে কোনো প্রাণীর মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোনো ধরনের ঝুঁকি ছাড়াই ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে শরীরে সরাসরি সাপের বিষের প্রয়োগ তাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জের। তবে প্রতিষেধক তৈরিতে সাপের বিষ নিয়ে গবেষণার কারণও রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাপের বিষে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন ও কেমিক্যাল রয়েছে। একটি সাপ থেকে যে পরিমাণ বিষ পাওয়া যায় তাতে কয়েকশ’ উপাদান থাকে। আর পৃথিবীতে যেসব প্রজাতির প্রাণীর শরীরে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যায়, তার ২৬টিই হলো সরীসৃপ গোত্রীয়।
উচ্চরক্তচাপে ব্যবহৃত একটি ওষুধের নাম ক্যাপটোপ্রিল। এক ধরনের পেপটাইডের গঠনবিন্যাসের ওপর ভিত্তি করে ওষুধটি তৈরি করা হয়। গবেষকরা পেপটাইডটি সংগ্রহ করেন সাপের বিষ থেকে। ওষুধটি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে প্রায় ৪০ বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। আর এ কারণেই মূলত সাপের বিষ থেকে ক্যান্সারের ওষুধ তৈরির জন্য নড়েচড়ে বসেছেন বিজ্ঞানীরা। ইউনিভার্সিটি অব নর্দান কলোরাডোর একজন গবেষক ড. স্টিফেন ম্যাকেসি। তার গবেষণাগারটিই হবে প্রথম কোনো প্রতিষ্ঠান যেখানে ক্যান্সার চিকিৎসায় সাপের বিষ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। সিবিএস ডেনভারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যাকেসি বলেছেন, এখানে একটা জটিল বিষয় হলো এগুলো (সাপের বিষ) বস্তু বা প্রাণীর মৃত্যুর কারণ। আবার স্বাভাবিক বিষয় হলো এগুলো বেঁচে থাকার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়। সাপের বিষের এ বৈশিষ্ট্যই ওষুধ তৈরির পেছনে যৌক্তিক কারণ। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক সাপের বিষ ক্যান্সার সেলকে নিখুঁতভাবে ধ্বংস করতে সক্ষম। সূত্র : ওয়েবসাইট