করোনা ভাইরাসের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিস্থিতি তুলে ধরেন এফবিসিসিআই সভাপতি ফজলে ফাহিম
করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় এক মাসের মতো আমদানি-রপ্তানিতে বিঘ্ন ঘটায় ব্যাংকিং খাতে লেনদেন বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা করছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই)। এক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে চলমান রাখতে ঋণসহায়তা ও ঋণপত্রের মূল্য পরিশোধের বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার রাজধানীর ফেডারেশন ভবনে করোনা ভাইরাসের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিস্থিতি তুলে ধরতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনসহ পর্ষদের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ফাহিম বলেন, এফবিসিসিআই আপাতত কোনো আর্থিক সহায়তা চায় না। ব্যবসায়ীরা চান, চীনের সঙ্গে যে আমদানি-রপ্তানি হয়, তা যেন স্বাভাবিকভাবে চলে। করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় এক মাসের মতো আমদানি-রপ্তানিতে বিঘ্ন ঘটেছে। এ অবস্থায় আমদানি-রপ্তানি যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য ঋণপত্র সহায়তা ও ঋণপত্রের মূল্য পরিশোধের বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। আবার করোনা ভাইরাসের কারণে কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান যথাযথ কাগজপত্র সরবরাহ করলে ওই ব্যবসায়ীদের এলসির বিপরীতে নেওয়া ঋণ যেন খেলাপি না করা হয়। কিংবা বাড়তি মাশুল, সুদের ওপর জরিমানা করা না হয় সেদিকেও নজর রাখা প্রয়োজন। কেননা, এ বিলম্বের পেছনে ওই ব্যবসায়ীর দোষ নয়, দুর্যোগ দায়ী।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চীনের মোট বাণিজ্য প্রায় ১৪.৬৮ বিলিয়ন ডলারের। দেশের প্রধান রপ্তানিপণ্য পোশাক খাতের ফেব্রিকস ও সিনথেটিক ইয়ার্নের প্রধান উৎস চীন। পোশাক খাতে বিশেষ করে ওভেন খাতের কাঁচামালের ৬০ শতাংশ আসে চীন থেকে। অন্যদিকে নিট খাতে আসে প্রায় ২০ শতাংশ কাঁচামাল। এছাড়া অন্য অনেক শিল্পে কাঁচামালের প্রধান উৎস চীন। করোনা ভাইরাসের কারণে আমাদের অর্থনীতির ম্যানুফ্যাকচারিং ভ্যালু চেইনের ৮০ শতাংশের মতো প্রায় এক মাস স্থগিত ছিল। এ সময়ে খুব সামান্য পরিমাণ শিপমেন্ট হয়েছে। এছাড়া রপ্তানি পণ্যের কাঁচামালসহ মধ্যবর্তী কাঁচামাল, মূলধনী যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশসহ তৈরি পণ্য যেমন ইলেক্ট্রনিক মোটর ইত্যাদির সিংহভাগই চীন থেকে আমদানি হয়। করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। চলতি বছর জানুয়ারি মাসে ৬.৭২ লাখ টন পণ্য এসেছে অথচ ২০১৯ সালের একই সময় এর পরিমাণ ছিল ৮.৫১ লাখ টন, ২০১৮ সালে ছিল ৮.৮২ লাখ টন।