করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বের এয়ারলাইন্সগুলো এ বছর প্রায় ৩ হাজার কোটি ডলারের মতো হারাতে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক একটি সংস্থা। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস আতঙ্কের কারণে এক দশকের মধ্যে চলতি ২০২০ সালে বিমান যাতায়াতে চাহিদাও কমবে বলে ধারণার কথা জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইএটিএ)। বিশ্বের ৩২ দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া নতুন, নিউমোনিয়াসদৃশ ভাইরাসে চীন ও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের এয়ারলাইন্সগুলোই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছে বলেও অনুমান তাদের। ফ্লাইট সংখ্যা কমাতে এয়ারলাইন্সগুলো বাধ্য হওয়ায়, তা তাদের আয়ে প্রভাব ফেলছে বলে আইএটিএ জানিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, ২০২০ সালে কেবল এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের এয়ারলাইন্সগুলোর আয়ই কমবে ২ হাজার ৭৮০ কোটি ডলার; এশিয়ার বাইরের এয়ারলাইন্সগুলো হারাবে ১৫০ কোটি ডলার। আইএটিএ’র অনুমান, চীনের এয়ারলাইন্সগুলো এ বছর তাদের দেশের ভেতরই ১ হাজার ২৮০ কোটি ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এয়ারলাইন্সগুলোকে তাদের ধারণক্ষমতা ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে রুট কমানোর মতো জটিল সব সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। এ বছর তাদের জন্য খুবই কঠিন সময় যাবে, বলেছেন আইএটিএ’র মহাপরিচালক আলেক্সান্দ্রে দে জুনিয়াক। আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটি বলছে, চীনের ভেতরে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব এবং বাইরের দেশগুলোতে সামান্য সংক্রমণের বিষয়টি বিবেচনা করে তারা এয়ারলাইন্সগুলোর এ সম্ভাব্য ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করেছে। কিন্তু করোনা ভাইরাস যদি অন্য দেশগুলোতেও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে। করোনা ভাইরাসের কারণে যে পরিমাণ ক্ষতি হবে, তাতে বছর শেষে এয়ারলাইন্সগুলো লোকসানে থাকবে কি না, সে বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেছে তারা। আইএটিএ বলছে, ২০০৩ সালে সার্সের প্রাদুর্ভাবের সময় বিমান যাতায়াতে মানুষের চাহিদা কমার হারের সঙ্গে মিলিয়ে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কী পরিমাণ ক্ষতি হতে পারে, সে বিষয়ে অনুমান করেছে তারা। বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের দুটি এয়ারলাইন্সও তাদের আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা জানিয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে এশিয়া ভ্রমণে মানুষের চাহিদা কমায় এ পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। অস্ট্রেলিয়ার ক্যুয়েন্তাস বলেছে, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে তাদের ১০ কোটি ডলারের মতো ক্ষতি হতে যাচ্ছে। অন্যদিকে এয়ার ফ্রান্স কেএলএম কেবল ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যেই তাদের ক্ষতি ২১ কোটি ডলার ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছে। বিডিনিউজ