নিখোঁজের সময় সৈয়দ সাদমান সাকির বয়স ছিল মাত্র দেড় বছর। তখন হয়তো মুখে মাত্র মা-বাবা শব্দটি ফুটতে শুরু করেছিল। সন্তানের মুখের যে মুধর ডাক শোনার তীব্র আকাক্সক্ষা বাবা-মায়ের থাকে সেই ইচ্ছাপূরণ হওয়ার আগেই মায়ের বুক খালি করে সাদমান সাকিরকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শিশু সাদমান সাকির জন্য প্রতীক অনশনের আগে কেটে গেছে ২৬টি মাস। এখন তার বয়স হয়েছে সাড়ে ৩ বছর। যেদি সে জীবিত থাকে তবে হয়তো এখন কথা বলতে শিখে গেছে। অপহরণের পর এতদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও মায়ের বুকে ক্ষত ঠিক আগের মতোই। তাইতো সন্তানের সন্ধান চেয়ে আয়োজিত অনশন কর্মসূচিতে অঝোর ধারায় অশ্রু ঝরছিল মা হামিদা খালেদ লিপির চোখ থেকে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মাইক্রোফোন হাতে নিতেই তার কান্নার গতি আরও বেড়ে যায়। বুকে সন্তান হারানোর বেদনা আর চোখে জল নিয়েই নিখোঁজ সাদমান সাকির মা হামিদা খালেদ লিপি বলেন, ‘আমি সন্তানহারা মা। কী বলব কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ আমার সন্তানকে ফিরিয়ে দিন, আমার সোনার চাঁদকে ফিরিয়ে দিন। এ সময় বাবা সৈয়দ ওমর খালেদ বলেন, ২৬ মাস হয়ে গেল আমার সন্তান এখনও উদ্ধার হলো না। প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে ঘুরতে আমাদের জীবন শেষ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলতে চাই। এ খুন-গুমের নগরী নারায়ণগঞ্জের দিকে একটু দৃষ্টি দেন। এ নারায়ণগঞ্জে ত্বকী হত্যা হয়েছে বিচার হয়নি। যদি হতো তাহলে হয়তো সাকির অপহরণ হতো না। যদি ত্বকী হত্যার বিচার হতো তাহলে নারায়ণগঞ্জে অনেক গুম-খুন কমে যেত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি গণতন্ত্রের মা। আপনি সফল রাষ্ট্রনায়ক। মুক্তিযুদ্ধের সন্তান হিসেবে আপনার কাছে অনুরোধ আমার সন্তানকে আপনি ফিরিয়ে দেন।
তিনি আরও বলেন, আড়াই মাস পর তারা পিবিআইকে মামলাটা দিল। পিবিআই তদন্ত করল। এক মাস না যেতেই ঘটনার রহস্য তারা উদঘাটন করেছিল।