আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ২৩-০২-২০২০ তারিখে পত্রিকা

হুমকিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ

সাঘাটায় সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ অভাব

আবদুল কাফি সরকার, গাইবান্ধা
| দেশ

সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ না করায় বিলীনের পথে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ- আলোকিত বাংলাদেশ

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার ও রক্ষাণাবেক্ষণের অভাবে এখন বিলিনের পথে। দিন দিন বাঁধের ওপর অবৈধ জনবসতি এবং বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে উঠেছে। যেন এসব দেখার কেউ নেই। এতে বন্যার হুমকির মধ্যে রয়েছে সাঘাটা উপজেলা জনপদ। যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর ডানতীর রক্ষা কল্পে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ১৯৬৬ সালে রংপুর তিস্তা ব্রিজ হতে সিরাজগঞ্জ হুলাসাগর পর্যন্ত ২১৪ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ বাধটির রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে দিন দিন বাঁধ দখল করে গড়ে উঠেছে জনবসতিসহ বিভিন্ন ধরনের অসংখ্য স্থাপনা। বিশেষ করে উপজেলার বাঁশহাটা হতে জুমারবাড়ী পর্যন্ত প্রায় ২২ কিলোমিটার বাঁধের অংশে লোকজনের ঘরবাড়ি, দোকান, রাইচ মিলসহ অসংখ্য কাঁচাপাকা স্থাপনা গড়ে উঠেছে। বাঁধে এসব অবৈধ জনবসতি ও স্থাপনা সরিয়ে ফেলার জন্য কোনো তাগিত এবং বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের ব্যাপারে সরকারি বা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো উদ্যোগ না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ বাঁধটি এখন বিলিনের পথে। ফলে মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়েছে বাঁধের পশ্চিমাংশে অবস্থিত সাঘাটার বিস্তীর্ণ জনপদ। সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার জুমারবাড়ী ইউনিয়নের বসন্তের পাড়া গ্রাম হতে শুরু করে সাঘাটা ইউনিয়নের বাঁশহাটা পর্যন্ত বাঁধের কোথাও দুই পাশের ঢালু খাড়া করে কেটে সমতল করে নিজেদের ইচ্ছামতো ঘরবাড়ি তুলে লোকজন বসবাস করছেন। এদের মধ্যে দুই-চারজনের বাড়িঘর করার মতো জমি না থাকলেও সিংহ ভাগ পরিবারের রয়েছে জায়গা-জমি। তারা এক সময় নদীভাঙনে গৃহহারা হয়ে এ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। পরবর্তীতে তাদের ভেঙে যাওয়া জমিগুলোয় চর উঠলেও তারা বাঁধ ছেড়ে ওই চরে আর ফিরে যায়নি। অনেকের মূল ভূখ-েই জায়গা-জমি থাকলেও সেখানে বাড়িঘর না করে বাঁধেই বসবাস করছেন। বাঁধে বসবাসকারী লোকজনকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে কেউ কিছু না বলার সুবাদে নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী বাঁধ কেটে বাড়িঘর তুলে বসবাস করছে তারা। একই ধরনের প্রতিক্রিয়া জানালেন বাঁধে বসবাসরত আরও অনেকেই। এ বিষয়ে সাঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট জানান, এসব লোকজন দীর্ঘদিন ধরে বাঁধে বসবাস করছে। লোকজনের বসবাসের কারণে বাঁধটি হুমকির মধ্যে পড়েছে। জরুরিভাবে এ বাঁধ সংস্কার প্রয়োজন। পাশাপাশি বাঁধে বসবাসকারী এসব লোকজনের মধ্যে কোনো কোনো পরিবারের জায়গা-জমি নেই। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করাও প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রেজাউর রহমান জানান, এরই মধ্যে বাঁধটি পুনঃসংস্কারের জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট বিভাগে অর্থ ছাড়ের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। অর্থ পেলে পর্যায়ক্রমে সংস্কার করা হবে। এজন্য বাঁধে আশ্রয় নেওয়া লোকজনকে তাদের বাড়িঘর সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।