চুনারুঘাট উপজেলার বালিয়ারি। এ স্থানে রয়েছে কয়েকটি ব্রিক ফিল্ড। এ অবস্থায় ফসল চাষ করা কঠিন। এখানে হার মানতে নারাজ কৃষক আরব আলী। কঠোর পরিশ্রম ও মনের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তিনি প্রায় এক একর জমিতে ‘দেশীয় উন্নত জাতের গোল বেগুন’ রোপণ করেন। জমিতে জৈব সার প্রয়োগ করে বিষমুক্ত বেগুন চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তাই স্থানীয় লোকজনের মুখে মুখে বেগুন চাষে তার সফলতার কথা শোনা যাচ্ছে।
বছরের আষাঢ় মাসে চারা রোপণের পর দুই মাসের ভেতরে বেগুন বিক্রি শুরু করেন এ কৃষক। প্রায় সাত মাস এ বেগুন বিক্রি করে তিনি প্রায় লাখ টাকা আয় করেন। চুনারুঘাট উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত রঙ্গু হোসেনের ছেলে মো. আরব আলী বেগুন চাষের পাশাপাশি পুকুরে মাছ চাষ করেন। দুর্গাপুর বাজারে রয়েছে মাছ ও মোরগের খাবার বিক্রির দোকান। জমি ও পুকুরের দেখভালের সঙ্গে তিনি ব্যবসা চালিয়ে সৎপথে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, আরব আলী জমি পরিচর্যায় ব্যস্ত। প্রায় প্রতি দিনই জমি থেকে বেগুন সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। বর্তমানে প্রতি কেজি বেগুন ২৫ থেকে ২৮ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কৃষক আরব আলী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, শ্রম দিলে ফল আসে। বিষমুক্ত বেগুন চাষে তিনি সফল হয়েছেন। এটি তার কাছে গর্বের।
এ বেগুন চাষে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা পেয়েছেন গোপালপুরের কৃষক ফারুক আহমেদের কাছ থেকে। এজন্য তিনি তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। কৃষক ফারুক আহমেদ বলেন, চেষ্টা করলেই বিষমুক্ত সবজি চাষ করা যায়। জৈব সার প্রয়োগ করে বেগুন চাষে তার প্রমাণ দিলেন কৃষক আরব আলী।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. জালাল উদ্দিন বলেন, দেশী উন্নত গোল বেগুন চাষ করে সফল কৃষক আরব আলী। তার কেমিক্যালমুক্ত চাষাবাদ দেখে অন্য চাষিরাও ভালোমানের বেগুন চাষ করছেন। কৃষিতে তার বিরাট অবদান আছে। তিনি আমাদের গর্ব। তার মঙ্গল কামনা করছি।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. তমিজ উদ্দিন খান বলেন, চেষ্টা করলে ফল আসে। বীজ রোপণ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে গোল বেগুন আসে। জমিতে জৈব সার প্রয়োগ করছেন এ কৃষক। তাই বিষমুক্ত বেগুন উৎপাদন হয়েছে।