আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ২৬-০২-২০২০ তারিখে পত্রিকা

দুদক ক্ষমতাসীনদের বেলায় নমনীয় : টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
| নগর মহানগর

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) পর্যবেক্ষণ বলছে, দুর্নীতি দমন কমিশন সরকারবিরোধীদের ওপর খড়্গহস্ত হলেও ক্ষমতাসীনদের বেলায় নমনীয়। ‘দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ উদ্যোগ : বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর একটি ফলো আপ গবেষণা’ প্রতিবেদনে একথা বলেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি। 

টিআইবি বলেছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ‘জিরো টলারেন্সের’ কথা বলা হলেও সরকারি কোনো কোনো উদ্যোগের মাধ্যমে দুদকের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিন বছরে দুদকের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের পর মঙ্গলবার ঢাকার মাইডাস সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে টিআইবি। সংবাদ সম্মেলনে গবেষণাপত্র তুলে ধরেন টিআইবির রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাম্মী লায়লা ইসলাম ও সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহজাদা এম আকরাম।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুদকের ক্ষমতা রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিরোধী দলের রাজনীতিকদের হয়রানি করা এবং ক্ষমতাসীন দল-জোটের রাজনীতিকদের প্রতি নমনীয়তা প্রদর্শনের অভিযোগ রয়েছে দুদকের বিরুদ্ধে। সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতির ক্ষেত্রে সরকারবিরোধী অবস্থান যাদের, তাদের ব্যাপারে দুদক বেশি সক্রিয়। সরকারপক্ষে সেভাবে দুদক সক্রিয় নয়। মাঝেমধ্যে দুদক সরকারি দলের এমপিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকেন। ওই পর্যন্তই। এরপর আর কোনো কিছু দেখা যায় না। তিনি বলেন, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দুদকের ওপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার, তার বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি খুব যে হয়েছে, তা বলা যাবে না। দুর্নীতিবিরোধী অভিযান নিয়ে মানুষের আস্থার ঘাটতি রয়েছে। এর সুফল নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
টিআইবির প্রতিবেদনে ২০১৮ সালে প্রণীত সরকারি চাকরি আইনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে; যেখানে বলা হয়েছে, দুদক কোনো অভিযোগে সরকারি কোনো কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পূর্বানুমতি নিতে হবে। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমরা শুনেছি, এ চাকরি নীতি বাস্তবায়নে সরকারের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে ও দুদকও সক্ষমতার ঘাটতির পরিচয় দিয়েছে। এ নীতি বৈষম্যমূলক ও অসাংবিধানিক। এতে দুদকের ক্ষমতা খর্ব হওয়ার আশঙ্কা থাকে। দুদক তার নিজস্ব ধারণাপ্রসূত হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে বিরত থাকে। আমরা আশা করি, এ নীতি আদালত কর্তৃক প্রত্যাহার হবে।
স্বাধীনতা ও মর্যাদা; অর্থ ও মানবসম্পদ; জবাবদিহিতা ও শুদ্ধাচার; অনুসন্ধান, তদন্ত ও মামলা দায়ের; প্রতিরোধ, শিক্ষা, আউটরিচ কার্যক্রম; সহযোগিতা ও বাহ্যিক সম্পর্কÑ এ ছয়টি ক্ষেত্রের অধীনে ৫০টি নির্দেশককে ভিত্তি করে গবেষণাটি চালিয়েছে টিআইবি। ৫০টি নির্দেশকে দুদকের নানা কার্যক্রম বিবেচনায় স্কোরিং করেছে টিআইবি। সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ স্কোর পেয়েছে ‘প্রতিরোধ-শিক্ষা-আউটরিচ কার্যক্রম, স্বাধীনতা ও মর্যাদা পেয়েছে ৬৭ শতাংশ স্কোর, সহযোগিতা ও বাহ্যিক সম্পর্ক ক্ষেত্র পেয়েছে ৬৭ শতাংশ স্কোর। সর্বনিম্ন ৪৪ শতাংশ স্কোর পেয়েছে অনুসন্ধান, তদন্ত ও মামলা দায়েরের ক্ষেত্র।