আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ২৬-০২-২০২০ তারিখে পত্রিকা

খালেদা পেছন থেকে কলকাঠি নেড়েছেন

বললেন তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
| শেষ পাতা

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিডিআর বিদ্রোহে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ যারা পেছন থেকে কলকাঠি নেড়েছিল তদন্তের মাধ্যমে তা বের হয়ে আসা প্রয়োজন। বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে যারা ছিল তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা দরকার। মঙ্গলবার সচিবালয়ে টিভি নাট্য পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের সঙ্গে মতবিনিময় ও রাজনৈতিক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। 
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, বিডিআর বিদ্রোহের বিচার সঠিক হয়নি, তারা ক্ষমতায় আসলে পুনরায় সঠিক বিচার করবেন এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সবকিছুতে একটু ভুলত্রুটি খোঁজার চেষ্টা করে। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের শাস্তির বিষয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছে, আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। আদালতের রায়কে কটাক্ষ করে কথা বলা, আবার আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দেয়া, আন্দোলনের চেষ্টা করা, এসব বিএনপি ক্রমাগত করে আসছে। তিনি বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের যে বিচার হয়েছে, পৃথিবীর ইতিহাসে এত বড় ঘটনায় এতগুলো সাক্ষী ও আসামি নিয়ে বিচারকার্য খুব কম হয়েছে। এ দুরূহ কাজটি শেষ করতে সরকার আদালতকে সহযোগিতা করেছে এবং আদালতের রায় হয়েছে। রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে যারা অভিযুক্ত হয়েছে তারা সাজা ভোগ করছে। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানে বিডিআর বিদ্রোহের সঙ্গে যে তাদের সংশ্লিষ্টতা আছে, যেটি নিয়ে নানা মহল থেকে কথা উঠেছিল এবং বেগম জিয়ার সেদিনকার যে ভূমিকা তা নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। বিডিআর বিদ্রোহের সঙ্গে যারা সরাসরি জড়িত ছিল তাদের বিচার হয়েছে। আমি মনে করি, পেছন থেকে যারা কলকাঠি নেড়েছিল খালেদা জিয়াসহ সেগুলো তদন্তের মাধ্যমে বের হয়ে আসা প্রয়োজন। 
হাছান মাহমুদ বলেন, কারণ বিডিআর বিদ্রোহের দিন ভোর রাতে খালেদা জিয়া তার ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। সেদিন খালেদা রাতে এবং দিনে ৪০ বারের বেশি তার পলাতক ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেছেন। খালেদা সচরাচর ১১, ১২টার আগে ঘুম থেকে ওঠেন না। সেদিন কেন তিনি ভোর রাতে নিরুদ্দেশ হলেন এ রহস্য খুঁজে বের করে এ বিডিআর বিদ্রোহে যারা মদদ দিয়েছিল তাদেরও বিচারের আওতায় আনা দরকার। যুব মহিলা লীগের নেত্রী পাপিয়া ইস্যুতে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ নিয়ে যুব মহিলা লীগ থেকে বক্তব্য দেয়া হয়েছে। তাকে এরই  মধ্যে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরপর তিনবার ক্ষমতায় থাকার কারণে আমাদের সংগঠনে অনেক অনুপ্রবেশকারী ও সুযোগ সন্ধানী ঢুকেছে। তারা অনেকেই নানা অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত। তারা তাদের অপকর্মকে ঢাকতে রাজনৈতিক ঢাল ব্যবহার করার জন্য আমাদের সংগঠনে ঢুকেছে। এদের খুঁজে বের করে সংগঠন থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্যাসিনোকা-ে গ্রেপ্তার গে-ারিয়া আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়ার পুরান ঢাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ সিন্দুক ভর্তি ১৫ বস্তা টাকা এবং বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোনো কিছু ধরা পড়লেই সেটাকে আওয়ামী লীগের নেতা বানানো সঠিক নয়। যারা এ ধরনের কাজ করছে তারা দুষ্কৃতকারী, কোনো একটা সংগঠনের কোনো এক জায়গায় তার নাম আছে এ রকম বলে তাদের আওয়ামী লীগের নেতা সাজানোর চেষ্টা করা সঠিক নয়।
বিদেশি মডেল দিয়ে বিজ্ঞাপন নির্মাণের ওপর বাড়তি ট্যাক্স আরোপের চিন্তা করছে সরকার। একই সঙ্গে ওই বিজ্ঞাপন টেলিভিশনে প্রচারের ওপর কী করা যায়? তাও ভাবছে সরকার। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশীয় শিল্পী ও শিল্পের সুরক্ষায় শিগগিরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 
তথ্যমন্ত্রী বলেন, অতীতে যখন দেশে একটিমাত্র টিভি চ্যানেল বিটিভি ছিল, তখন কিন্তু বিদেশ থেকে বিজ্ঞাপনচিত্র বানিয়ে আনলে এক্সট্রা (অতিরিক্ত) ট্যাক্স দিতে হতো। বিদেশি মডেলদের দিয়ে বিজ্ঞাপন তৈরি করলে এখনও ট্যাক্স দেওয়ার বিধান আছে। তবে সেক্ষেত্রে শুধু শিল্পীকে ট্যাক্স দিতে হয়। তবে যারা বিজ্ঞাপনচিত্র বানিয়ে আনেন তাদের অনেকেই বলেন, শিল্পীকে কোনো সম্মানী দেওয়া হয়নি, সুতরাং শিল্পীকে কোনো ট্যাক্স দিতে হয় না। এতে করে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে এবং আমাদের শিল্পীরা কাজ হারাচ্ছেন। আমাদের দেশের শিল্পীদের যথেষ্ট ট্যালেন্ট থাকা সত্ত্বেও তারা কাজ হারাচ্ছেন। এ জন্য আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, মুক্তবাজার অর্থনীতি, যে কেউ যে কাউকে দিয়ে বিজ্ঞাপনচিত্র বা কোনো কিছু বানাতে পারে, সেটি হলিউডের শিল্পীকে দিয়েও বানাতে পারে, মুম্বাইর শিল্পীকে দিয়েও বানাতে পারে।