প্রকৃতির রাজ্যে এসেছে ফুল ফোটা বসন্ত। নবকিশলয়ে জেগেছে কাঁপন। এই তো কিছুদিন আগে আমরা ভালোবাসা দিবস ও পহেলা ফাল্গুন একসঙ্গে উদযাপন করেছি। ফাগুন এখনও যায়নি চলে। এখনও প্রকৃতির বাতায়নে একদিকে চলেছে বসন্তের মহাসমারোহ, আরেকদিকে বইমেলায় শুরু হয়েছে নতুন বইয়ের প্রকাশনা উৎসব। আমি একজন লেখক হয়ে এমন দিনে কী করে ঘরে বসে থাকি? তাই তো বারবার ছুটে আসি প্রাণের মেলায় নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিতে।
মেলায় উন্নতমানের বই বেশি বেশি আসুকÑ এমনটি আমার প্রত্যাশা। প্রকৃতপক্ষে একটি ভালো ও মানসম্মত বই-ই পারে একজন মানুষের রুদ্ধ দুয়ার খুলে দিতে এবং তার জীবনে জ্বেলে দিতে পারে নতুন আলো। সে আলোয় পথ চলতে চলতে একদিন তার জীবন হবে ধন্য। তিনি তখন হয়ে উঠবেন সোনার মানুষ। অবশ্য বইমেলা মানে প্রাণের মেলায় বিদায়ের সুর বাজছে। আজ মেলার শেষ দিন।
আমার কষ্ট হয়, স্বাধীনতার এত বছর পরও সর্বস্তরে বাংলা ভাষা আজও চালু হয়নি। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলার ব্যবহার হচ্ছে না। পাঠ্যবইগুলো বাংলায় অনুবাদ করে এ কাজটি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে অশুদ্ধ বাংলা ব্যবহার এবং ভুল বানান অহরহ চোখে পড়ে। তাই আমার মন ব্যথিত হয়ে ওঠে। ভাষা ব্যবহারে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।
বেশি বেশি মানসম্মত বাংলা সাহিত্যের বই বিদেশি ভাষায় এবং বিদেশি সু-সাহিত্য বাংলা ভাষায় অনুবাদ করতে হবে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উৎকর্ষ সাধনের জন্য অনুবাদের ওপর জোর দিতে হবে। বাংলা একাডেমি অনুবাদের কাজগুলো করে যাচ্ছে। তবুও আরও বেশি বেশি অনুবাদ প্রয়োজন।
মা, মাতৃভূমি এবং মাতৃভাষা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন মাতৃভূমি পেয়েছি। এখন মাতৃভাষাকে সমৃদ্ধশালী করার জন্য আমাদের কাজ শুরু করতে হবে। এ ব্যাপারে আমাদের গবেষণা চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। হ
সাবেক শিক্ষক
ভাওয়াল বদরে আলম কলেজ
গাজীপুর