আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ২৯-০২-২০২০ তারিখে পত্রিকা

জাবিতে জীবনের গল্প শোনালেন অর্থমন্ত্রী

জাবি প্রতিনিধি
| নগর মহানগর

জাবিতে কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির নবীনবরণ ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ষ আলোকিত বাংলাদেশ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার জীবনের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন। প্রধান অতিথির ভাষণে অর্থমন্ত্রী শিক্ষাজীবনের অর্থনৈতিক টানাপোড়ন থেকে শুরু করে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সভাপতি ও সর্বশেষ রাজনৈতিক জীবনের গল্প শোনান।

তিনি বলেন, ইন্টারমিডিয়েটের আগে আমার তিনবার অর্থাভাবে পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিভিন্ন মানুষের সহযোগিতা ও দোয়ায় আমাকে আজকের অবস্থানে এনেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়তে আসার মতো পরিবহন খরচও আমার হাতে ছিল না। কুমিল্লা থেকে ঢাকা আসার জন্য মাত্র দুটি স্টেশন আসার টাকা ছিল। পরে হেঁটে ও বিভিন্নভাবে দুই দিনে ঢাকায় পৌঁছাই।
এছাড়াও চট্টগ্রাম কমার্স কলেজে থাকাকালীন ছাত্ররাজনীতি, অডিট ফার্মের ব্যবসা, আবাহনী ক্রিকেট দলের দায়িত্ব গ্রহণ, সেখান থেকে দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে বিসিবি ও আইসিসির সভাপতি দায়িত্বকালীন অভিজ্ঞতার কথা শোনান তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির নবীনবরণ ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মাঝে নেই। তবে তিনি আমাদের জন্য সবকিছু গুছিয়ে রেখে গেছেন। আমাদের জন্য নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, কোন পথে গেলে আমাদের এগোনো সহজ হবে। তিনি আমাদের জন্য সেভাবেই অর্থনীতিতে সফলতার পরিকল্পনা তৈরি করে গেছেন।
আইসিসির এ সাবেক সভাপতি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে দেশে ফিরে একটি বিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতি সাজানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিলেন। তিনি পরিকল্পিতভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে এ দেশের কতিপয় মানুষ জাতির পিতাকে তিন বছরের মাথায় পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এ তিন বছরে বঙ্গবন্ধু যে কাজ করে গেছেন, পৃথিবীর ইতিহাস গবেষণা করেও এ ধরনের ঘটনা পাওয়া যাবে না। কোন সালে কী হবে, কখন আমরা কী করব, কীভাবে পরিকল্পনা সাজাব, সবকিছু নির্ধারণ করে দিয়ে গেছেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, যে দেশে শিক্ষা নেই সে দেশে আলো নেই। তাই প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশে শিক্ষার আলো জ্বালাতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও অনেক বড় একটি অনুদান দিয়েছেন; যা দিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন রূপে সাজানো যাবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম প্রধান ও অর্থমন্ত্রীর একান্ত সচিব ফরিদ আজিজ, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ও পরিসংখ্যান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোজাম্মেল হক এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ ফয়সাল বিন করিম প্রমুখ।
এসময় অর্থমন্ত্রী পথশিশুদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন। এছাড়া কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে গুণিজন সম্মাননা প্রদান করা হয়। পরে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
এর আগে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির নবীনবরণ ও পুনর্মিলনীর উদ্বোধন করেন ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। এরপর সেখান থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়।