সারা দেশে নদ-নদী, খাল ও জলাশয় দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে সরকার। প্রথম পর্যায়ে সরকার সারা দেশে নদনদী, খাল ও জলাশয়ের পাড় থেকে ৫ হাজার ৫৭৪টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে এবং ৫৯৩ একর জায়গা দখলমুক্ত করেছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযান চলাকালে রাজশাহী বিভাগে সর্বমোট ১ হাজার ২২ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে সরকার এবং এ সময় ৮৮ একর জমি দখলমুক্ত করেছে। শুধু সিরাজগঞ্জ জেলাতে ৭০০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে। খুলনা বিভাগে বিভিন্ন নদীর তীর থেকে সর্বমোট ১ হাজার ৩৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে সরকার এবং উদ্ধার করেছে ৪০ একর জমি। যার মধ্যে শুধু মাগুরা জেলায় সর্বোচ্চ ২৫০ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে। অভিযানের সময় রংপুর বিভাগের মোট ৬৫৭টি অবৈধ স্থাপনা ভেঙে নদী দখল থেকে প্রায় ৪৬ একর জমি উদ্ধার নদী-খালের সাড়ে
করেছেন। এর মধ্যে দিনাজপুর জেলায় প্রায় ৪৬৫টি অবৈধ কাঠামো উচ্ছেদ করা হয়েছে। বরিশাল বিভাগে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্ছেদ অভিযান চলাকালীন ১৬ একর জমি উদ্ধার করার জন্য নদীর তীর থেকে ২০১টি অবৈধ কাঠামো ভেঙে ফেলা হয়েছে।
ঢাকা বিভাগে মোট ৭৬৮টি স্থাপনা ভেঙে নদীর তীরের প্রায় ৫৯ একর জমি উদ্ধার করেছে এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৮৬৩টি অবৈধ কাঠামো উচ্ছেদ করেছেন ও ৫৮ একর জমি উদ্ধার করেছেন। শুধু ময়মনসিংহ জেলার পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তীর থেকে প্রায় ৫৫০টি কাঠামো উচ্ছেদ করা হয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুসারে, সিলেট বিভাগে ২২৫টি অবৈধ স্থাপনা নদী তীর থেকে ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং চট্টগ্রামে মোট ৮০০টি স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে ২৭৫ একর জমি দখল থেকে উদ্ধার করেছে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আসিফ আহমেদ এর সঙ্গে আলাপকালে বাসসকে তিনি জানান, সারা দেশে উচ্ছেদ অভিযানের দ্বিতীয় পর্ব ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পানি উন্নয়ন বোর্ড সারা দেশের ছোট নদী ও খাল দখলমুক্ত করার জন্য ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর অভিযান শুরু করে। সব জেলা প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থানীয় অফিসাররা নদী, খাল ও জলাশয়ের তীর থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দখলমুক্ত করার জন্য অভিযান পরিচালনা করেন। সারা দেশে ৬৪ জেলায় একযোগে এ অভিযান শুরু হয়েছিল এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড ৯২ হাজার ২৯৪টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের লক্ষ্য স্থির করেছিল। এ সময় মোহাম্মদপুরের রামচন্দ্রপুর খালের তীরে পানি উন্নয়ন বোর্ড অভিযান শুরু করে। এ অভিযানটি পানি সম্পদ সচিব কবির বিন আনোয়ার উদ্বোধন করেন।
দেশের ৬৪ জেলায় ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ের এই অভিযান পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় তদারকি করছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কবির বিন আনোয়ার বলেন, এক বছরের দীর্ঘ প্রচেষ্টা শেষে সব জেলা প্রশাসক বাংলাদেশ পানি আইন-২০১৩ অনুযায়ী অবৈধ কাঠামোর তালিকা তৈরি করেছেন।
তিনি জানান, দখলকারীরা অভিযান শেষ হওয়ার পরপরই পুনরায় দখল করতে ফিরে আসত, কিন্তু এবার পুনরায় দখল ঠেকাতে খালের তীরে গাছ ও হাঁটার পথ নির্মাণ করছে সরকার। সূত্র : বাসস