আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ৭-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

শূন্য থেকে শীর্ষে ওঠার উদাহরণ রংধনু গ্রুপ

রিয়াজ হোসেন, রূপগঞ্জ
| শেষ পাতা

রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ রফিকুল ইসলাম

দেশের শিল্প-বাণিজ্য জগতের অন্যতম সুপরিচিত প্রতিষ্ঠান রংধনু গ্রুপ। বছরে প্রায় আড়াইশ মিলিয়ন ডলার মুনাফা অর্জনকারী এ প্রতিষ্ঠান মাত্র দুই দশকে এর প্রধানের দক্ষ ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক বাজারে নিজের সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। আত্মশক্তিতে বলিয়ান ব্যক্তি পিছিয়ে থাকে নাÑ এমন ভাবনা থেকে কাজ করা রংধনু গ্রুপ প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছে। সততা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, পণ্যের গুণগত মান আর প্রতিশ্রুতি বজায় রাখার ব্যাপারে সোচ্চার রংধনু গ্রুপের কর্ণধার আলহাজ রফিকুল ইসলাম এ দেশের তরুণ শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য এক আদর্শ অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। 

রংধনু গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান আলহাজ রফিকুল ইসলাম ১৯৬৮ সালের ২ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আলহাজ মো. আমানউল্যাহ ও মা আলহাজ আনোয়ারা বেগম। শৈশব থেকেই রফিকুল ইসলাম মেধাবী, পরিশ্রমিক, উচ্চাকাক্সক্ষী ও সাহায্য পরায়ণ ছিলেন। শূন্য থেকে শুরু করে নিজের আত্মবিশ্বাস, কঠোর পরিশ্রম ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নিজেকে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন দেশ-বিদেশে। ধীরে ধীরে তিনি তার ব্যবসা সফলতার সঙ্গে সম্প্রসারণ করেন। আত্মপ্রত্যয়ী ও নিত্যনতুন সৃষ্টিশীলতায় বিশ্বাসী রফিকুল ইসলাম প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছেন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দেশের ব্যাপক লোকের কর্মসংস্থানের চেতনায়। এরই মধ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন রংধনু বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড, রংধনু এগ্রো অ্যান্ড বেভারেস লিমিটেড, রংধনু সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড, মেহেদী ফুড অ্যান্ড বেভারেস লিমিটেড। 

আলহাজ রফিকুল ইসলাম পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড, দি মার্চেন্ট ব্যাংক লিমিটেড ও দেশের স্বনামধ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের পূর্বাচল শাখার একজন পরিচালক। তিনি একজন ধর্মভীরু ব্যক্তিত্ব। সমাজসেবক হিসেবে তিনি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও এতিম খানায় পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে তিনি দরিদ্র, অসহায়, দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ান। ক্রীড়ানুরাগী হিসেবে খ্যাতি রয়েছে রফিকুল ইসলামের। একইসঙ্গে তিনি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য আত্মকর্মসংস্থান এবং উন্নয়নমুখী বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। পারিবারিক জীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক। অবসরে তিনি বই পড়া ও খেলাধুলা করতে পছন্দ করেন। আলহাজ রফিকুল ইসলাম বর্তমানে রংধনু বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড, রংধনু এগ্রো অ্যান্ড বেভারেস লিমিটেড, রংধনু সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড, মেহেদী মার্ট শপিং সেন্টার, রংধনু সিটি সেন্টার, প্রোমেক্স এডিবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, প্রোমেক্স মিল্ক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মেহেদী ফুড কোর্ট, জে এস জুয়েলার্স, রংধনু ফাউন্ডেশন, আর এম ফাউন্ডেশন, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের চেয়ারম্যান। এছাড়া তিনি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সদস্য। নাওড়া পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক এবং আমিরজান স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজীবন সদস্য। বরুণা সমাজ সংঘের দাতা সদস্য ও বসুন্ধরা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে বর্তমানে রয়েছেন।
রংধনু গ্রুপ বাংলাদেশের সুপরিচিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। মূলত প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা রাজধানীকেন্দ্রিক হলেও দেশজুড়ে এর বিস্তৃত। নতুনত্ব, গতিশীলতা, আন্তরিক প্রচেষ্টা ও ত্যাগের কারণে রংধনু গ্রুপের সম্পদ ও আয় দ্রুত বেড়েছে। তারা মানবসম্পদকে গুরুত্ব দেয়। এজন্য তারা দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষক দ্বারা মেধাবীদের খুঁজে বের করে। তাদের মেধা বিকশিত করার সুযোগ করে দেয়। প্রতিষ্ঠানটি সব সময় আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে কাজ করার চেষ্টা করে এবং নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেন। সর্বোত্তম ব্যবসায়িক সম্পর্কের জন্য দেশের সব প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান রংধনু গ্রুপের যে কোনো প্রয়োজনে সবসময়ই আর্থিক লেনদেনের জন্য আগ্রহী থাকে। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দেশ-বিদেশে কোম্পানির সব অংশীদারদের প্রতি আন্তরিক ও নমনীয়তার কারণে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। বিশ্বস্ততা, সততা ও স্বচ্ছ ব্যবসায়ীর সম্পর্কের কারণে প্রতিষ্ঠানটি ২৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বার্ষিক আয় করতে সক্ষম হয়েছে। রংধনু গ্রুপ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে যৌথ উদ্যোগে ব্যবসা করার জন্য অনুপ্রেরণা জুগিয়ে থাকে এবং বাংলাদেশে ব্যবসা সফল হওয়ার জন্য যত ধরনের সহযোগিতা করা প্রয়োজন, তার সবই তারা করে থাকে।
রংধনু গ্রুপের মিশন ও ভিশন : রংধনু গ্রুপ নিজেদের সামর্থ্য ও চেয়ারম্যানের যোগ্য নেতৃত্বের কারণেই দেশে উন্নয়ন এবং দেশের মানুষকে স্বনির্ভর করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারছে। দেশের উন্নয়ন ধারার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব অগ্রগতি ও বৈচিত্র্যতা নিয়ে এগিয়ে চলছে। আর এটাই ছিল গ্রুপটির প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ রফিকুল ইসলামের লক্ষ্য। এ কথা সত্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশ্বকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে এবং বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থ্য আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য ও উন্নয়নের চাবিকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির দ্রুত উন্নয়ন আমাদের বিশ্বকে পরিচিত করেছে এক বৈশ্বিক গ্রামে বা বিশ্বায়নে। সর্বোপরি বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির ওপর বিশ্বায়ন এবং প্রভাবে জনজীবন হয়ে উঠেছে আরও প্রতিযোগিতামূলক, জটিল ও প্রযুক্তিনির্ভর। বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয় হওয়ায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যেন অর্থহীন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন বাস্তবতায় অর্থনীতি কোনো জাতি এবং জাতীয় জীবনের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। বলা যায়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিকনির্ভরতা, বিনিয়োগ সম্ভাবনা, কাঁচামাল এবং তথ্য আদান-প্রদানের সহজলভ্যতা বিশ্বকে একটি প্রতিযোগিতামূলক রণক্ষেত্রে পরিণত করেছে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকাই হচ্ছে বর্তমান ব্যবসায়িক জগতের মূলমন্ত্র। 
বর্তমান বিশ্বটা এমন যে, এখানে মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যবহারকারীদের উচ্চমানের সেবা প্রদানের লক্ষ্যেই ব্যবসায়ীরা মাঠে নামেন। মজবুত ভিত্তি এবং অত্যন্ত দক্ষ মানবসম্পদের ওপর নির্ভর করেই রংধনু গ্রুপ অসাধারণভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছে এবং স্থানীয় করপোরেট সংস্কৃতি এবং বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। অসাধারণ অগ্রগতি ও ব্যবসায়িক সম্প্রসারণের পরও এ প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য অপরিবর্তিত আছে। আর তা হলোÑ বাংলাদেশ এবং এর নাগরিকদের জন্য দেশি কল্যাণকর কিছু করা এবং তাদের সর্বাধিক সন্তুষ্টি প্রদান করা। 
রংধনু গ্রুপ অব কোম্পানির আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ক্রেতাদের সেবা প্রদান করা নিজেদের কর্তব্য হিসেবে বিবেচনা করে। কারণ তারা মনে করে, ক্রেতাদের সন্তুষ্টিই তাদের সফলতার মূল চাবিকাঠি। ২০ বছর ধরে রংধনু গ্রুপ একটি দক্ষ বোর্ড দ্বারা অভিজ্ঞতার সঙ্গে বিভিন্ন উদ্যোগ ও কার্যক্রম আন্তর্জাতিক পরিম-লে পরিচালনা করে আসছে। রফিকুল ইসলাম রংধনু গ্রুপকে প্রতিষ্ঠা করেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে উন্নতির পথে পরিচালিত করছেন। পরিচালনা গ্রুপের সদস্যদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শিক্ষা ও পেশাদারিত্ব রংধনু গ্রুপের দিগন্ত প্রসারিত করতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। রংধনু গ্রুপ সুন্দর ও স্বচ্ছ পরিচালনা এবং একটি স্বাধীন পেশাদার সংস্কৃতি তৈরিতে বিশ্বাসী। গ্রুপটির ব্যবস্থাপনায় রয়েছে একদল পেশাদার এবং উদ্যোগী কর্মকর্তা। তারা আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিরন্তন কাজ করে যাচ্ছেন। গ্রাহক, শেয়ারহোল্ডার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সহযোগীদের আয় বাড়াতেও কাজ করছেন।