সুন্দরবনসংলগ্ন খুলনার কয়রা, পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা, দাকোপ ও রূপসা উপজেলায় ৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে আট কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দাকোপের বানিশান্তা ও বটিয়াঘাটার আমিরপুর ইউনিয়নে বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়। এ প্রেক্ষাপটে পানি উন্নয়ন বোর্ড ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের প্রতিবেদন রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর সূত্র জানায়, এসব উপজেলায় ৮০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো হচ্ছেÑ পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা, দাকোপ, রূপসা উপজেলার ভৈরব ও রূপসা নদীর তীর। এ ছাড়া সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলায় ১২ কিলোমিটার, আশাশুনি উপজেলায় ১৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। এসব এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। ফণীর আঘাত থেকে রক্ষার জন্য খুলনার উপকূল এলাকার ১০ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী (অ. দা.) পলাশ কুমার ব্যানার্জী এ প্রতিবেদককে জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। গত মাসে জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় দাকোপ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, ৩২ ও ৩৩ নং পোল্ডারের বাঁধগুলোর নির্মাণ কাজ ধীর গতিতে চলছে। উপজেলায় বাঁধের ২৭টি পয়েন্ট খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কয়রা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ সভায় উল্লেখ করেন, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে ছয়টি ইউনিয়নের বাঁধ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ উপজেলার শাকবাড়িয়ায় কপোতাক্ষ নদের ভাঙনে এলাকাবাসী আতঙ্কগ্রস্ত রয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, তেরখাদা উপজেলার পারহাজী গ্রাম এলাকায় আত্রাই নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। রূপসা ও ভৈরব নদীর ভাঙন থেকে খুলনা নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা রক্ষায় একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
খুলনা-৬ এ সংসদ সদস্য আকতারুজ্জামান বাবু পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলায় ৫৫ কিলোমিটার টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সংসদের প্রথম অধিবেশনে দাবি তোলেন। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আইলা নামের প্রাকৃতিক দুর্যোগে কয়রা উপজেলায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত একসপ্তাহে দাকোপ উপজেলার বানিশান্তা বাজারে বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। রোববার পশুর নদীর পানির চাপে বেড়িবাঁধের চারটি স্থান বিধ্বস্ত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল ওয়াদুদ ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। ৫০০ পরিবারের প্রত্যেককে পাঁচ কেজি করে চাল, ডাল, লবন, চিনিসহ অন্য ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হয়েছে।