এএফসি কাপে ফিরতি ম্যাচে আগামীকাল সন্ধ্যা ৭টায় ভারতের চেন্নায়িন এফসির মুখোমুখি হবে আবাহনী। ঘরের মাঠ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রতিশোধের জয় পেলে গ্রুপের শীর্ষে উঠবেন আকাশি-নীল জার্সিধারীরা। সেটা অনুপ্রেরণা হবে ১৯ মে প্রিমিয়ার লিগে বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে হাইভোল্টেজ ম্যাচের। সেটি জিতলে শীর্ষের দল কিংসের (৩৭) সঙ্গে দুইয়ে থাকা আবাহনীর (৩৩) পয়েন্টের ব্যবধান কমে হবে ১, লিগ শিরোপা ধরে রাখার বড় সুযোগ চলে আসবে। সমীকরণ মাথায় নিয়েই ১৯ মে কিংসের বিপক্ষে খেলতে নামবে আবাহনী।
কিন্তু আবাহনীর দুঃশ্চিন্তার নাম চোট। ডিফেন্ডার তপু বর্মণ ও মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ চলতি মৌসুমে আর মাঠে নামতে পারছেন না! দুইজনের পায়ে অস্ত্রোপচার হওয়ায় বিছানায় শুয়ে-বসে সময় কাটাচ্ছেন। পেশাদার ফুটবলার হয়েও চোটে সাইড লাইনে চলে যাওয়ায় হতাশা গ্রাস করেছে তাদের।
দুই সপ্তাহ আগে আহমেদাবাদে চেন্নায়িনের কাছে আত্মঘাতী গোলে হারায় এএফসি কাপে ‘ই’ গ্রুপের দুইয়ে নেমেছে আবাহনী, ঘরের মাঠে প্রতিশোধ নিতে পারলে শীর্ষে ফিরবে। হেরে গেলে দ্বিতীয় পর্বের পথ প্রায় রুদ্ধ হয়ে যাবেÑ ফলে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে আবাহনী। ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু বলেন, ‘এএফসি কাপের চূড়ান্ত পর্ব খেলতে হলে আমাদের জিততেই হবে। আমরা যে পিছিয়ে আছি বা গেল ম্যাচ হেরেছি; সেটা কভার করার জন্য ম্যাচটি জরুরি।’
প্রিমিয়ার লিগের মধ্যবর্তী দলবদলে প্রায় সব দল শক্তি বাড়িয়েছে। বাদ যায়নি আবাহনী, কোরিয়ান রিক্রুট কো’র বদলে নিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ওয়েলিংটনকে। চেন্নায়িনের বিপক্ষে ম্যাচে পাচ্ছে তাকে। তবে চোটে তপু, ফাহাদ, বাদশাকে পাচ্ছে না তারা। তারপরও রুপুর আশা ‘ওদের না পেলেও আমরা আশা করছি বাকি যারা আছে তারা ভালো নৈপুণ্য করতে পারলে ও স্বাগতিক সুবিধা নিতে পারলে জেতা সম্ভব।’ লিগ শিরোপার সম্ভাবনা রয়েছে, এএফসি কাপের চূড়ান্ত পর্বের পথও খোলা।
অনুশীলনে চোটে পড়েন তপু, এএফসি কাপে অ্যাওয়ে ম্যাচে চেন্নায়িনের বিপক্ষে খেলতে গিয়ে লিগামেন্টে আঘাত পান ফাহাদ। তাই দুইজনকে বসতে হয়েছিল চিকিৎসকের ছুরির নিচে। আচমকা চোট জর্জর হওয়ায় খেলতে না পারার আক্ষেপ তাদের কণ্ঠে। গেল বছর ঢাকায় সাফ ফুটবলে ২ গোল করা ডিফেন্ডার তপু বলেন, ‘এভাবে পায়ে আঘাত পেয়ে ফুটবল থেকে দূরে থাকতে হবে, ভাবিনি। অথচ আবাহনীর সামনে কঠিন পরীক্ষা। লিগে শিরোপা লড়াই আছে, এএফসি কাপের ম্যাচও বাকি। এখন কী করার আছে? দুর্ভাগ্যই।’ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ফাহাদেরও আক্ষেপের সুর, ‘ভাগ্যটাই খারাপ, বারবার চোটে পড়ছি। এ বছর আর খেলতে পারব না, তার ওপর জাতীয় দলের হয়ে খেলা মিস করব।’ জাতীয় দলের হয়ে লাওসের বিপক্ষে খেলতে না পারায় আক্ষেপ তপুর কণ্ঠে, ‘লাওস ম্যাচটা আমাদের জন্য কঠিন, জিততে পারলে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে আরও কিছু ম্যাচ খেলার সুযোগ পাব। এ সময় কিনা চোট!’ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তপু ও ফাহাদকে না পেয়ে কিছুটা হতাশ আবাহনীর পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমসও, রিজার্ভ বেঞ্চে যারা আছেন, তাদের নিয়েই চলতে চান তিনি। তপু, ফাহাদ ও বাদশার চোটের কথা পৌঁছে গেছে লন্ডনে জাতীয় দলের কোচ জেমি ডের কানেও। তাদের চোট নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন হলেও বাস্তববাদী জেমি, বিকল্প যারা আছেন তাদের ওপর ভরসা রাখতে চাইছেন, ‘তপু ও ফাহাদ নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়। লাওস ম্যাচে তাদের না পেলে কী করার আছে। লিগে বাকি যারা খেলছেন, তাদের মধ্য থেকে নিতে হবে। বিকল্প যারা আছেন, তারাও ভালো করতে পারবেন।’