চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে হিমায়িত খাদ্য ও কৃষি পণ্যের রপ্তানি আয় বেড়েছে। জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) হালনাগাদ তথ্যে এটা জানা গেছে।
ইপিবির তথ্যে দেখা গেছে, জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে হিমায়িত খাদ্যের রপ্তানি আয় ধরা হয়েছিল ৪১ কোটি ৩১ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৪৪ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। এই হিসাবে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৮ দশমিক ০৬ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৪৩ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। ফলে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে হিমায়িত খাদ্যের রপ্তানি আয় বেড়েছে ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। কৃষি পণ্যের ক্ষেত্রেও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫৮ কোটি ১৭ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৭৯ কোটি ডলার। এ হিসাবে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৩৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে কৃষি পণ্যের রপ্তানি হয়েছিল ৫৪ কোটি ৩১ লাখ ডলার। ফলে এ খাতেও পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে কৃষি পণ্যের রপ্তানি আয় বেড়েছে ৪৫ দশমিক ৬১ শতাংশ।
হিমায়িত খাদ্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত জীবিত মাছ রপ্তানি আয় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেড়েছে। এই সময়ে জীবিত মাছ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭৩ লাখ ডলার। বিপরীতের রপ্তানি হয়েছে ১ কোটি ৬৮ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১২৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরের একই সময়ে মাছ রপ্তানি হয়েছিল ৩৮ লাখ ডলার। সেই হিসাবে মাছ রপ্তানি বেড়েছে ৩৪০ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের মাছ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯০ লাখ ডলার। হিমায়িত মাছ রপ্তানির ক্ষেত্রেও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত হিমায়িত মাছ রপ্তানি হয়েছে ৫ কোটি ৬১ লাখ ডলার, যেখানে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে হিমায়িত মাছ রপ্তানি হয়েছিল ৫ কোটি ডলার। ফলে চলতি অর্থবছরে হিমায়িত মাছ রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৪ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি রপ্তানি হয়েছে। আর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ২৮ শতাংশ বেশি রপ্তানি হয়েছে।
তবে চিংড়ির ক্ষেত্রে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত চিংড়ি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩২ কোটি ৭২ লাখ ডলার। অর্জিত হয়েছে ৩১ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। ফলে এ সময়ে চিংড়ি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২ দশমিক ৭০ শতাংশ কম অর্জিত হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে চিংড়ি রপ্তানি হয়েছিল ৩৫ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের চিংড়ি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪০ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরে চিংড়ি রপ্তানি হয়েছিল ৪০ কোটি ৮৭ লাখ ডলার।
কাঁকড়া রপ্তানির ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল সময় পর্যন্ত কাঁকড়া রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ কোটি ৩০ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৪ কোটি ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২১০ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরের একই সময়ে কাঁকড়া রপ্তানি হয়েছিল ১ কোটি ১৬ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে কাঁকড়া রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরে কাঁকড়া রপ্তানি হয়েছিল ১ কোটি ৭৩ লাখ ডলার।
হিমায়িত খাদ্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য খাতের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। অন্যান্য খাতের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ১ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১২ দশমিক ১০ শতাংশ কম। আগের অর্থবছরের একই সময়ে অন্যান্য খাতের রপ্তানি হয়েছিল ১ কোটি ৩২ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের অন্যান্য খাতের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ১ কোটি ৫৩ লাখ ডলার।
কৃষি পণ্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত চা রপ্তানির ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত চা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২২ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ২৪ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরের একই সময়ে চা রপ্তানি হয়েছিল ২৪ লাখ ডলার। চলিত অর্থবছরে চা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৮ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরে চা রপ্তানি হয়েছিল ২৭ লাখ ডলার।
সবজি রপ্তানির ক্ষেত্রেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে সবজি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৮ কোটি ৭৫ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরের একই সময়ে সবজি রপ্তানি হয়েছিল ৬ কোটি ৩১ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে সবজি রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত তামাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৫ কোটি ৭১ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরের একই সময়ে তামাক রপ্তানি হয়েছিল ৫ কোটি ২৯ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে তামাক রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরে তামাক রপ্তানি হয়েছিল ৫ কোটি ৬৩ লাখ ডলার।
চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত ফল রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৭ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৩ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৮১ দশমিক ৪০ শতাংশ কম। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ফল রপ্তানি হয়েছিল ২২ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে ফল রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২১ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরে তামাক রপ্তানি হয়েছিল ২২ লাখ ৪ হাজার ডলার।
চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত মশলা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ কোটি ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৩ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১১ দশমিক ২২ শতাংশ কম। আগের অর্থবছরের একই সময়ে মশলা রপ্তানি হয়েছিল ৩ কোটি ৭২ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে মশলা রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরে তামাক রপ্তানি হয়েছিল ৪ কোটি ২৯ লাখ ডলার।
চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত শুকনো খাবার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৮ কোটি ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ১৯ কোটি ২৮ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরের একই সময়ে শুকনা খাবার রপ্তানি হয়েছিল ১৫ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে শুকনো খাবার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরে তামাক রপ্তানি হয়েছিল ২০ কোটি ১ লাখ ডলার।
কৃষি পণ্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য খাতের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত অন্যান্য খাতের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৪ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৪০ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৬৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরের একই সময়ে অন্যান্য খাতের রপ্তানি হয়েছিল ২২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে অন্যান্য খাতের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ২৮ কোটি ৯৯ লাখ ডলার।