আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১৪-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

সম্রাট নিরোর গোপন কুঠুরির সন্ধান!

আলোকিত ডেস্ক
| শেষ পাতা

রোমে মাটির তলায় গোপন কুঠুরির খোঁজ মিলল। আজ থেকে প্রায় ২ হাজার বছর আগে সেটি তৈরি হয়েছিল বলে জানা গেছে। রোমে ঐতিহাসিক নির্মাণ কেন্দ্রে মেরামতের কাজ চলছিল। খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে সম্প্রতি সেখানেই এ গোপন কুঠুরির খোঁজ পেয়েছেন প্রতœতত্ত্ববিদরা। ওই কুঠুরির দেওয়ালে নরঘোটকসহ নানা পৌরাণিক জীবের ছবি আঁকা রয়েছে। রয়েছে ফুল, পাতা, সাপ এবং পাখির ছবিও।

দেওয়ালের গায়ে এ ধরনের চিত্র বা ফ্রেস্কো বহু বছর আগে আঁকা। ছবিগুলির রং খানিকটা ফিকে হয়ে গেলেও, সেগুলো ভালো অবস্থাতেই রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতœতত্ত্ববিদরা। পঞ্চম রোমান সম্রাট নিরো যে চোখ ধাঁধানো প্রাসাদ তৈরি করেছিলেন, এ কুঠুরি তারই একটি অংশ বলে ধারণা তাদের।

৫৪ থেকে ৬৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রোমের শাসক ছিলেন সম্রাট নিরো। তবে পূর্বসূরিদের মতো তার ভাবমূর্তি একেবারেই উজ্জ্বল নয়। বরং অসংখ্য হত্যাকা-ের হোতা বলে পরিচিত। এমনকি ক্ষমতার লোভে নিজের মা এগ্রিপিনাকেও পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। বিষ খাইয়ে হত্যা করেছিলেন সৎভাই ব্রিতানিকাসকেও। ৬৪ খ্রিষ্টাব্দে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের সাক্ষী থেকেছিল রোম সাম্রাজ্য। ১৮ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত টানা ৬ দিন ধরে জ্বলতে থাকা ওই আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছিল সবকিছু। তার মধ্যেও নাকি নিরোকে অস্বাভাবিক রকম নির্বিকার থাকতে দেখা গিয়েছিল।
রোমের অধিবাসীদের দাবি, বিশাল এলাকাজুড়ে চোখ ধাঁধানো প্রাসাদ গড়তে চেয়েছিলেন সম্রাট নিরো। তাই নিজেই অগ্নিকা- ঘটিয়েছিলেন। যে কারণে আগুন নেভার সঙ্গে সঙ্গেই ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নির্মাণকাজ শুরু করে দেন। প্রাসাদ তৈরির খরচ তুলতে সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি করের বোঝাও চাপিয়ে দেন বলে অভিযোগ নিরোর বিরুদ্ধে।
এছাড়া ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে, চোখের সামনে রোম যখন পুড়ছিল, তখন প্রাসাদে দাঁড়িয়ে বেহালা বাজাচ্ছিলেন নিরো। পরে তৎকালীন সংখ্যালঘু খ্রিষ্টানদের ওপর অগ্নিকা-ের দায় চাপিয়ে দেন তিনি। তার জন্য কিছু খ্রিষ্টানকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যাও করেছিলেন।
অগ্নিকা-ের পর ওই ধ্বংসস্তূপের ওপরই স্বপ্নের দোমাস অরিয়া বা স্বর্ণগৃহ নির্মাণ করেন। হাতির দাঁত এবং মূল্যবান রতœ দিয়ে সাজান প্রাসাদটিকে। কিন্তু তার অল্পদিনের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ চরমে পৌঁছায়। দেশের সেনেট তাকে জনগণের শত্রু ঘোষণা করে। প্রাণে বাঁচতে প্রথমে পালিয়ে গেলেও, পরে নিজেই আত্মহত্যা করেন নিরো। তার মৃত্যুর পর পরবর্তী শাসকরা ওই প্রাসাদ ভেঙে ফেলেন। তার পরিবর্তে সেখানে তৈরি হয় গ্ল্যাডিয়েটরদের জন কলোসিয়াম। সাধারণ মানুষের জন্য বিশাল স্নানাগারও তৈরি হয়। গোপন কুঠুরিটি ওই প্রাসাদেরই অংশ বলে ধারণা প্রতœতত্ত্ববিদদের। আনন্দবাজার