-খানাপ্রতি মাসিক আয় ১৫ হাজার ৯৮৮ টাকা
-কমেছে মাথাপিছু খাবার গ্রহণের পরিমাণ
দেশে দরিদ্র জনসংখ্যার হার দিন দিন কমতির দিকে থাকলেও এখনও মোট জনসংখ্যার ২১ দশমিক ৮ শতাংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। এর মধ্যে আবার ১১ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ অতি দরিদ্র বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। সোমবার প্রকাশিত বিবিএসের ‘হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে’ (এইচআইইএস) প্রকল্পের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন বিবিএসের মহাপরিচালক ড. কৃষ্ণা গায়েন। প্রকল্প পরিচালক ড. দিপংকর রায়, উপপরিচালক আবদুল লতিফ, বিবিএসের পরিচালক জিয়াউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম পরিচালক একেএম আশরাফুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ২০১৭ সালের অক্টোবরে ২৫তম আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবসে এ জরিপের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনের চূড়ান্ত বিশ্লেষণ তুলে ধরে কৃষ্ণা গায়েন বলেন, দেশে দারিদ্র্যের হার দিন দিন কমছে। ২০০৫ সালে যেখানে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪০ শতাংশ, ২০১৬ সালে তা কমে দাঁড়ায় ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। আবার ২০০৫ সালে যেখানে অতি দারিদ্র্যের হার ছিল ২৫ দশমিক ১ শতাংশ, সেখানে ২০১৬ সালে তা দঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০১৮ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ২১ দশমিক ৮ শতাংশ এবং অতি দারিদ্র্যের হার ১১ দশমিক ৩ শতাংশ। এ সময় জানানো হয়, আগের জরিপগুলোয় ২০০৫ সালে মোট ১০ হাজার ৮০টি খানায় এবং ২০১০ সালে ১২ হাজার ২৪০টি খানা নমুনা হিসেবে নেওয়া হয়। ২০১৬ সালে খানার সংখ্যা বাড়িয়ে ৪৬ হাজার ৮০টি খানায় জরিপ চালানো হয়।
খানার আয়-ব্যয় : জরিপ অনুযায়ী দেশের খানাপ্রতি মাসিক আয় দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯৮৮ টাকা। ২০১০ সালে ছিল ১১ হাজার ৪৭৯ টাকা। মাথাপিছু আয় ২০১৬ সালে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৯৪০ টাকা, যা ২০১০ সালে ছিল ২ হাজার ৫৫৩ টাকা। সর্বশেষ হিসাবে পরিবারভিত্তিক ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৭১৫ টাকা। ২০১০ সালে যা ছিল ১১ হাজার ২০০ টাকা।
মাথাপিছু আয় ও ব্যয় বাড়লেও খাদ্যগ্রহণের প্রবণতা কমে এসেছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, ২০১০ সালে মাথাপিছু ৪১৬ গ্রাম ভাত গ্রহণ করা হলেও এর পরিমাণ কমে ৩৬৭ গ্রামে নেমেছে। ২০১৬ সালে মাথাপিছু গম গ্রহণের প্রবণতা ছিল ১৯ দশমিক ৮৩ গ্রামে। ২০১০ সালে এর পরিমাণ ছিল ২৬ দশমিক ০৯ গ্রাম। মাথাপিছু ক্যালরি গ্রহণ ২০১৬ সালে ২ হাজার ২১০ কিলো ক্যালরিতে নেমে এসেছে। ২০১০ সালে মাথাপিছু গড়ে ২ হাজার ৩১৮ কিলো ক্যালরি খাদ্য গ্রহণ করা হতো।
স্বাধীনতার পর থেকে অর্থের বড় অংশ খাদ্যে ব্যয় করা হলেও এবার খাদ্যবহির্ভূত খাতে বেশি অর্থ ব্যয় হচ্ছে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশে পরিবারগুলোর গড় অর্থ ব্যয়ের ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ ব্যয় হয়েছে খাদ্যে। এ সময়ে খাদ্যবহির্ভূত খাতে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৫২ দশমিক ৩০ শতাংশে। ২০১০ সালে খাদ্য খাতে ৫৪ দশমিক ৮ শতাংশ ও অন্য খাতে ৪৫ দশমিক ২০ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়েছিল।