আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ২৭-০২-২০২০ তারিখে পত্রিকা

দিল্লিতে সহিংসতা চলছেই নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭

আলোকিত ডেস্ক
| আন্তর্জাতিক

দিল্লির রাস্তায় বুধবার ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর টহল- সংগৃহীত

  • হাইকোর্টের উদ্বেগ 
  • শান্তি বজায় রাখার আহ্বান মোদির
  • অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি কংগ্রেসের
  • তিন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সহিসংতা চলছেই। বুধবারও জাফরাবাদ, মৌজপুর, ভজনপুরা, গোকুলপুরি এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত  হয়েছেন দুই শতাধিক। রোববার বিকালে ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে (সিএএ) ঘিরে এর পক্ষে-বিপক্ষে থাকা জনতার মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত। এরপর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। সহিংস পরিস্থিতিতে পাথর নিক্ষেপ, গুলি, মারধর, বাড়িঘর, দোকানপাটে আগুন লাগানো, লুটতরাজ কিছুই বাকি থাকেনি। পরিস্থিতি আঁচ করে এক মাসের জন্য উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। কারফিউ উপেক্ষা করে দিল্লির ভগবানপুরে স্কুলবাসে আগুন লাগনো হয়েছে। এদিকে উত্তর-পূর্ব দিল্লির গুরু তেগবাহাদুর হাসপাতালে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সংঘর্ষে আহতদের প্রায় অর্ধেক গুলিবিদ্ধ। অশান্ত এলাকায় নামানো হয়েছে ৩৫ কোম্পানি আধাসেনা। এরপরও সংঘর্ষ হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। এদিকে দিল্লির চলমান সহিংসতা নিয়ে এতদিন নীরব ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অবশেষে বুধবার নীরবতা ভেঙে দিল্লিবাসীকে শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার আর্জি জানান তিনি। এদিন টুইটার বার্তায় মোদি বলেন, শান্তি এবং সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির মূল কথা। দিল্লির ভাইবোনদের কাছে অনুরোধ, সর্বদা শান্তি এবং সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখুন। যত দ্রুত সম্ভব দিল্লিতে শান্তি এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসাটা জরুরি। দিল্লিতে অশান্তি যখন তুঙ্গে, সেই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আতিথেয়তার ব্যস্ত ছিলেন মোদি। ওই সময়ে রাজধানীর পরিস্থিতি নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি তিনি। তা নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন বিরোধীরাও। তবে মোদি জানিয়েছেন, দিল্লির বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন তিনি। এদিকে চলমান সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দিল্লির হাইকোর্ট। পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিয়ে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরলিধর বললেন, ভারতে আগে যেমনটা হয়েছিল, সেভাবে আর একটা ১৯৮৪ সালের দাঙ্গা ঘটনা হতে দেওয়া যাবে না। জরুরি ভিত্তিতে হওয়া শুনানিতে পুলিশকে সংঘাতে আহতদের যথাযথ চিকিৎসা ব্যবস্থা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন দিল্লি হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন দিল্লি পুলিশকে চূড়ান্ত ভর্ৎসনা করে আদালত তিন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন। দিল্লি পরিস্থিতি যে মোটেই সুবিধার নয়, তা বুঝেই বিচারপতিরা বলেন, আমরা কেউ চাই না আরেকটা ৮৪-এর শিখ দাঙ্গা হোক। 
সংবাদ সম্মেলন সোনিয়ার : দিল্লির সংঘর্ষের দায় নিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি করেছেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে সোনিয়া অভিযোগ করেন, সংঘাত পরিস্থিতির ঘটনায় অমিত শাহসহ পুরো কেন্দ্রীয় সরকারই দায়ী। কংগ্রেস অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি করছে বলে জানান সোনিয়া। একই সঙ্গে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে নিশানা করেছেন সোনিয়া। তিনি বলেন, শান্তি ও সম্প্রীতি ফেরাতে মানুষের কাছে পৌঁছতে পারেনি প্রশাসন। এজন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল ও কেন্দ্রীয় সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি। আনন্দবাজার, এনডিটিভি