ভারতের কাছে ১৭ রানের হার দিয়ে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়া। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অঘটনের স্বপ্ন নিয়ে আজ স্বাগতিকদের বিপক্ষে মাঠে নামবেন সালমা, জাহানারারা। ক্যানবেরায় ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আগে কখনোই না খেলায়, ভিডিও ফুটেজ দেখে খেলার ধরন সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। এ বিশ্বকাপে স্পিনারদের বিপক্ষে খেলতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে অজিদের। সুযোগটা কাজে লাগাতে চানÑ জানান নারী দলের পেসার জাহানারা আলম।
কন্ডিশনিং ক্যাম্পের জন্য টুর্নামেন্ট শুরুর ১০ দিন আগেই অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। তবে বৃষ্টির বাধায় অনুশীলনের সুযোগ হয়েছে দুই দিন। তবুও অস্ট্রেলিয়ার দর্শনীয় স্থান আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ মেয়েরা। উপভোগ করার চেষ্টা করছেন পুরোটা সময়। তবে প্রথম ম্যাচের ফল যেন এ উপভোগে পূর্ণতা দিচ্ছে না। ভারতের কাছে হেরেছে দল। কিন্তু লড়েছে। এ লড়াইয়ের মন্ত্রটা থাকছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগেও। পেসার জাহানারা বলেন, আমরা জয়ের জন্যই মাঠে নামব। প্রথম ম্যাচে কী হয়েছে, সেটা মাথায় রাখতে চাই না। খুব ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়াতে চাই।’ চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপ খেলছে টাইগ্রেসরা। তবে মেগ ল্যানিং-এলিস পেরিদের বিপক্ষে খেলার সুযোগ হয়নি আগে কখনোই। তাই ভিডিও বিশ্লেষণেই ভরসা। জাহানারা আলম বলেন, এটুকুই যথেষ্ট নয়। কারণ এটা বড় মঞ্চ। অস্ট্রেলিয়াও বড় দল। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। তবে আমরা যদি পরিকল্পনা মাঠে কাজে লাগাতে পারি ফল আমাদের পক্ষেও আসতে পারে।’
আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের মেয়েদের অবস্থান ৯-এ। নামে-ভারে পার্থক্যটা পরিষ্কার। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের মোকাবিলায় কতটুকু প্রস্তুত সালমারা? জাহানারা বলেন, র্যাঙ্কিংয়ে ৬ কিংবা ৮ নম্বর দল, বড় দলের বিপক্ষে যতটা খেলার সুযোগ পায়, আমরা ততটা পাচ্ছি না। দেখুন, বিশ্বকাপের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারলেও ঠিকই বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ওদের হারিয়ে দিয়েছে ভারত। আমরাও বেশকিছু ম্যাচ খেলেছি। কিন্তু শ্রীলঙ্কার অনূর্ধ্ব ২৩ দলের বিপক্ষে খেলেছি। ভারতের এ আর বি দলের বিপক্ষে খেলেছি, যেখানে ওদের জাতীয় দলের কোনো ক্রিকেটার ছিল না।
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসে একচ্ছত্র আধিপত্য অজি নারীদের। আগের ছয় আসরের চারটিতেই চ্যাম্পিয়ন তারা। তবে এবার ঘরের মাটিতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে তাদের। ভারতের কাছে হেরে আসরের শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়টাও বেশ কঠিন ছিল। বিশেষ করে স্পিনারদের খেলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যাটসম্যানদের।
জাহানারার কথায়, অস্ট্রেলিয়া দলে অনেক বড় বড় নাম আছে। যারা স্পিন-পেইস সবকিছুর বিপক্ষেই সাবলীল। তবে আমাদেরও ভালো স্পিনার ও পেসার আছে। ওদের নিয়ে না ভেবে, নিজেদের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে চাই।’ সালমা-রুমানা-নাহিদা-ফাহিমাদের কাঁধে গুরুদায়িত্ব। বাংলাদেশকে কি জয়ের উপলক্ষ এনে দিতে পারবেন স্পিন চতুষ্টয়?
অস্ট্রেলিয়া পরিষ্কার ফেবারিট হলেও বাংলাদেশকে সমীহের চোখে দেখছেন ক্রিকেটার র?্যাচেল হেইন্স, ‘চ্যালেঞ্জটি হবে বেশ কৌতূহল জাগানিয়া। গেল কয়েক বছরে আমরা ওদের খেলা কিছুটা দেখেছি। কিছুটা অচেনা লড়াই বটে; তবে কিছু দিক থেকে একটি পরিস্থিতি পরিষ্কার করে তুলছে। আমরা নিজেদের দিকে মনোযোগ দিতে পারি, কোন ব্যাপারগুলো আমরা ঠিক করতে চাই, কোনগুলো আরও শানিত করতে পারি।’ প্রতিপক্ষ অচেনা হলে পরিকল্পনা করা কঠিন অনেক সময়। তবে কিছু ইতিবাচক দিকও যে আছে, সেটিও তুলে ধরলেন হেইন্সÑ ‘এটা মনে হয় ভালোই যে, ওদের সম্পর্কে আমাদের ধারণা নেই। আমরা মাঠে নেমে খেলব, বল দেখব আর মারব।’