আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ২৭-০২-২০২০ তারিখে পত্রিকা

কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় চুয়েট শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ

চট্টগ্রাম ব্যুরো
| খবর

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরে মানববন্ধন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বর্ষের প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত এ মানববন্ধন চলে। এরপর সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে উপাচার্যকে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা মনে করেন, আলাদা আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষায় ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি হলেও তারা নিজেদের মেধাকে তুলে ধরার অনেকগুলো সুযোগ পায়। কিন্তু সমন্বিত পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের এরূপ কোনো সুযোগ থাকছে না। যদি ভর্তি পরীক্ষার সেই একটা দিন যে কোনো পারিপার্শ্বিক সমস্যার কারণে পরীক্ষাটি ভালো করতে না পারে, তবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন একদিনেই নিঃশেষ হয়ে যাবে। যা প্রকৃত মেধা যাচাইয়ের অন্তরায়। পাশাপাশি স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাময়িক কিছু ভোগান্তি হলেও শিক্ষার্থীরা মেধা এবং পছন্দ অনুযায়ী ভর্তির সুযোগ পায়। এছাড়া তারা আরও জানান, মেডিকেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেদিক থেকে এখন পর্যন্ত দেশের চারটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। কিন্তু সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এ গৌরব নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা সত্ত্বেও তারা নিজেদের স্বকীয়তা বজায় রাখার জন্য ভর্তিচ্ছুদের কষ্টের কথা বিবেচনা করছে না। সেখানে চুয়েটে মাত্র ১০ হাজার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর জন্য সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যাওয়াকে তারা যৌক্তিক মনে করছে না। এসব বিষয়ে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বায়েজিদ বিন ইসলাম বলেন, যেহেতু অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি থেকে সরে এসেছে সেহেতু শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করতে হবে। চুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসে আট থেকে ১০ হাজার শিক্ষার্থী। যা জাবি, রাবি, চবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের তুলনায় অনেক কম। পাশাপাশি তাদের তুলনায় আমাদের এখানে যাতায়াতের ভোগান্তি এবং কষ্ট দুটোই কম। তাই আমাদের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করাই ভালো। সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্তের শুরু থেকে চুয়েটের বর্তমান এবং সাবেক শিক্ষার্থীরা দ্বিমত পোষণ করলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো লিখিত বা অলিখিত বিবৃতি পাওয়া যায়নি। এরই মধ্যে বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষাকে নাকচ করে দিয়েছেন। এরূপ পরিস্থিতিতেও চুয়েট প্রশাসনের নীরবতা পালনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন চুয়েটের বর্তমান এবং সাবেক শিক্ষার্থীরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. রফিকুল আলম বলেন, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় চুয়েট অংশগ্রহণ করবে কি না এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রাখে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল। তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন। উল্লেখ্য, ২৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকের পর ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের একমত পোষণের পরিপ্রেক্ষিতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি জানান।