বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলামরা প্রতিনিয়ত সুন্দরভাবে মিথ্যাকে গুছিয়ে সত্য হিসেবে পরিবেশন করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘সুন্দর করে গুছিয়ে মিথ্যা বলার যদি কোনো পুরস্কার থাকত, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম পুরস্কারটি পেতেন। যদি সবকিছুতেই না বলার প্রবণতা বিএনপি-জামায়াত পরিহার করত, বাংলাদেশ আরও অনেক এগিয়ে যেতে পারত।’ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে সাংবাদিক শাবান মাহমুদ রচিত ‘বঙ্গবন্ধুর সারাজীবন’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম, বিএনপি বলেছে দেশের মানুষকে নাকি সরকার জিম্মি করে রেখেছে। যে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ৬০০ ডলার, সেই আয় এখন দুই হাজার ডলারে উন্নীত হয়েছে। দেশের মানুষকে বিএনপি-জামায়াত জিম্মি করেছে। দেশের মানুষকে তারাই জিম্মি করে দিনের পর দিন অবরোধ ডেকে, মানুষের উপর আবার পেট্রলবোমাও মেরেছে তারা। রাজনীতির নামে এমন সহিংসতা এবং বীভৎসতা সম্প্রতি কোনো দেশে হয়নি।’ তিনি বলেন, একথা সত্য, পরপর তিনবার ক্ষমতায় থাকার কারণে আওয়ামী লীগে সুযোগসন্ধানী এবং অনুপ্রবেশকারীদের প্রবেশ ঘটেছে। যারা রাজনীতিকে ব্যবহার করে ফায়দা লুটতে চায়, ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চায়, এসব সুযোগসন্ধানীর বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাইÑ কে কোন দলের-মতের তা না দেখেই তিনি দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। ভবিষ্যতেও এ অভিযান চলমান থাকবে।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য। তার হাত ধরেই হাজার বছরের মুক্তিকামী বাঙালি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়েছে। বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন তা নয়, তিনি বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার স্বপ্ন দেখতেন। বঙ্গবন্ধু প্রায়ই বলতেন, বাংলাদেশকে তিনি জাপানের মতো একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলবেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্নের বাংলাদেশ কল্পনা করেছিলেন, আমরা বাংলাদেশকে সেই জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। দেশকে গঠন করতে হলে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতভেদ থাকবে। ক্ষমতায় থাকলে সমালোচনাও হবে, ভুল-ত্রুটিও হতে পারে। পৃথিবীর কোনো সরকার শতভাগ নির্ভুলভাবে কাজ করতে পারেনি। বিরোধী দল অবশ্যই আমাদের সমালোচনা সংসদে করবে এবং বাইরেও করবে। আমি অনুরোধ করব, আপনারা মূর্খের মতো সমালোচনা করবেন না। গঠনমূলক সমালোচনা করে আসুন সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই। প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ এবং ‘বঙ্গবন্ধুর সারাজীবন’ বইয়ের লেখক সাংবাদিক নেতা শাবান মাহমুদ।