কোনো আমানতকারী তার যত টাকাই আমানত রাখুক না কেন, ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবসায়ন হলে অবসায়নের ১৮০ দিনের মধ্যে প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে ফেরত পাবেন। এর মধ্যে অবসায়নের প্রথম ৯০ দিনের মধ্যে আমানতকারীকে টাকা ফেরত পেতে আবেদন করতে হবে।
আবেদনের পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে প্রত্যেক গ্রাহককে ১ লাখ টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এতে ৯২ শতাংশ আমানতকারী (ক্ষুদ্র আমানতকারী) তাদের আমানতের টাকাই ফেরত পেয়ে যাবেন। অবশিষ্ট ৮ শতাংশ আমানতকারী (বড় আমানতকারীরা) তাদের আমানতের বাকি টাকা ব্যাংকের দায়-দেনা হিসাবের পর অনুপাতিক হারে ফেরত পাবেন।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল ভবনের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিলের (ডিআইটিএফ) ওপর এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর গ্রাহকের আমানতের সুরক্ষা দিতে আমানত বিমা আইন নিয়ে সাধারণ মানুষের বিভ্রান্তি দূর করতে এ সংবাদ সম্মেলন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এতে আগামীতে কোনো ব্যাংক অবসায়ন হবে না। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান টাকা রাখার পর যদি ওই প্রতিষ্ঠান অবসায়নে যায়, তাহলে সব আমানতকারী মাত্র ১ লাখ টাকা পাবে খবরে বলা হচ্ছেÑ এটা আসলে গুজব। তিনি জানান, ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিলে ৮ হাজার ৭৪৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা জমা হয়েছে। এর আগে শুধু ব্যাংকের আমানতকারীরা বিমা সুবিধা পেতেন। কিন্তু নতুন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীদের এখানে যুক্ত করা হয়েছে। এখন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব আমানতকারী এ সুবিধা পাবেন। প্রথমে ব্যক্তি গ্রাহকের টাকা এবং পর্যায়ক্রমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। সবশেষে টাকা পাবে প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ। আমানতের সুরক্ষা আইনে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়ন হয়, তাহলে প্রথম প্রথম ৯০ দিনের মধ্যে আবেদন ও পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে আমানতের সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা ফেরত দেওয়া হবে। পরে আমানতের বাকি টাকা ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ফেরত দেওয়া হবে। এ বিষয়ে শঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, ১৯৮৪ সালে আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় যে আইন করা হয়, সেখানে আমানতের অর্থ ফেরত দেওয়ার পরিমাণ ছিল ৬০ হাজার টাকা। পরে ২০০০ সালে আমানত বিমা আইন প্রবর্তন করে ১ লাখ টাকা করা হয়। বর্তমানে এ আইনে আমানতকারীরা ১ লাখ টাকা পর্যন্ত পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে। তবে সংশোধিত আইনে এটি বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।