নরসিংদীর পলাশ উপজেলার সমবায় আদর্শ বিদ্যানিকেতন স্কুলের ২য় শ্রেণির ছাত্রী অশ্রু (৭) খেলতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ডান পাশের পা থেকে কোমড়ের হাড় সরে যায়। হতদরিদ্র বাবার পক্ষে মেয়ের চিকিৎসার ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে বিনা চিকিৎসায় প্রচন্ড ব্যথা নিয়ে ঘরে পড়ে আছে শিশু অশ্রু।
এ অবস্থায় মেয়ের চিকিৎসার খরচ যোগাতে সমাজের বিত্তবান-মানবিক মানুষের সাহায্য কামনা করেন শিশু অশ্রুর বাবা সঞ্জয় দাস।
দরিদ্র সঞ্জয় দাস পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌরসভার নতুন বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছেন। সঞ্জয় দাস পেশায় একজন দিন মজুর। এ নিয়ে গত ৬ জুন (শনিবার) স্থানীয় সাংবাদিকদের ফেসবুক আইডিতে ‘মানবিক সহযোগিতার আবেদন’ শিরোনামে কয়েকটি পোস্ট প্রকাশ হলে বিষয়টি নজরে আসে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহেদ আহমেদের। পরে তিনি শনিবার সন্ধ্যায় শিশু অশ্রুর শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নিতে তার বাড়িতে গিয়ে শিশু অশ্রুর সকল চিকিৎসার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় রোববার সকালে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে এ্যাম্বুলেন্সে করে শিশু অশ্রুকে তার বাবা-মায়ের সাথে পাঠানো হয়। এছাড়া ওই পোস্ট দেখে সমাজের কয়েকজন বিত্তবানরা মানবিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে শিশু অশ্রুর পরিবারের কাছে নগদ কিছু অর্থ তুলে দেন।
দুর্ঘটনায় আহত শিশু অশ্রুর মা আলো রানী দাস জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে অর্থ অভাবে মেয়ের চিকিৎসা করতে না পেরে স্থানীয় সাংবাদিকদের শরণাপন্ন হই। পরে তাদের সহযোগিতায় মেয়ের চিকিৎসার জন্য কিছু নগদ অর্থ পাই। এছাড়া সাংবাদিকদের ফেসবুকের পোষ্ট দেখে এএসপি স্যার মেয়ের চিকিৎসার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেয়।
এ ব্যাপারে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহেদ আহমেদ জানান, পলাশ উপজেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের কয়েকজন সাংবাদিকের ফেসবুক আইডিতে শিশু অশ্রুর জন্য মানবিক আবেদন পোষ্ট দেখতে পাই। পরে ওই ক্লাবের সাংবাদিকদের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে শিশুটিকে দেখতে যাই এবং মানবিকতার টানে তার চিকিৎসার সকল দায়-দায়িত্বভার গ্রহণ করি। আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে শিশু অশ্রুর মঙ্গল কামনা করি। সে যেনো দ্রুত সুস্থ হয়ে স্কুলে যাওয়ার পাশাপাশি তার শৈশব উপভোগ করতে পারে এটাই প্রত্যাশা করি।