করোনা পরিস্থিতিতে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি চা বাগানের শ্রমিকরাও ভালো নেই। এ বাগানের শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করছে প্রতীক থিয়েটার। প্রতীকের আহবানে সাড়া দিয়ে দেউন্দি চা বাগানের হতদরিদ্র তিনটি পরিবারকে চ্যানেল এস ও রেসকিউ এইড ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ১৫ হাজার টাকা মূল্যের এক মাসের খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
শনিবার (৬ জুন) বিকেলে এসব খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়। এ তিন পরিবারের কাছ থেকে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে।
এতে সুজলা বাগদী জানায়, তার বিয়ে হয়েছিল শ্রীমঙ্গলের এম আর খান চা বাগানে শ্রমিক মানিক বাগদীর সাথে। এক মেয়ে শ্যামলী ও ছেলে অনিককে রেখে প্রায় ১২ বছর পূর্বে মানিক বাগদী মারা যান। সন্তানদের নিয়ে দুঃখকষ্টে জীবন কাটছিল তার।
নিরুপায় হয়ে সন্তানদেরকে নিয়ে তিনি বাবার বাড়ী হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের দেউন্দি চা বাগানে চলে আসেন। মাটি কেটে ও ইটভাটায় কাজ করে কিছু অর্থ সংগ্রহ করে দেউন্দি চা বাগানে এক চা শ্রমিকের কাজ নেন। অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করলেও এ বছর মেয়ে শ্যামলী এসএসসি পরীক্ষায় ৩.০৬ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। ছেলে অনিকও অষ্টম শ্রেণীতে লেখাপড়া করছে। অভাব তার পিছু ছাড়ছে না।
কমলা মাঝির পরিবার। আট বছর আগে স্বামী মারা গেছেন। দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে দেউন্দি চা বাগানের ঝুঁপড়িঘরে বসবাস। চা বাগানে কোন কাজ নেই। তাই মাটি কাটা, ইটভাটায় কাজ করা। অনেক সময় পাহাড় থেকে পরিত্যক্ত জ্বালানী কাঠ এনে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে তাকে। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি লকডাউনে কাজ বন্ধ।
সারথী মুড়া দেউন্দি বাগানের বড়ছড়া বস্তিতে বাস। দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে বেকার অবস্থায় দিন কাটছে। চা বাগানে কোন কাজ নেই। দিন এনে দিন খাওয়া। স্বামী ছয় বছর আগে মারা গেছেন। বড় মেয়ে নবম শ্রেণীতে ও ছোট মেয়ে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী। ছোট ছেলে কিডনি রোগে আক্রান্ত।
এমন তিনটি হতদরিদ্র পরিবারকে সহায়তা করায় প্রতীক থিয়েটার সভাপতি সুনীল বিশ্বাস চ্যানেল এস ও রেসকিউ এইড ট্রাস্টের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ইংল্যান্ড প্রবাসীদের অপরিসীম দেশপ্রেম ও ভালবাসার ঋণ পরিশোধ করা যাবে না।