করোনাভাইরাস-সংকটে দুস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়াতে নিজের পছন্দের ব্রেসলেটটি নিলামে তুলেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। শনিবার (১৬ মে) বিকাল ৫টা থেকে আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান ‘অকশন ফর অ্যাকশনে’র ফেসবুক পেজে নিলাম শুরু হয়ে শেষ হয়েছে রোববার (১৭ মে) রাত সাড়ে ১২টায়।
মাশরাফির দেড়যুগের সঙ্গী প্রিয় ব্রেসলেটটির ভিত্তিমূল্য ৫ লাখ টাকা থাকলেও সেটি বিক্রি হয়েছে ৪২ লাখ টাকায়! ব্রেসলেটটি কিনেছে বাংলাদেশ লিজিং এন্ড ফাইন্যান্স অ্যাসোসিয়েশন।
শনিবার নিলাম শুরু হওয়ার পর থেকে ঘণ্টায় ঘণ্টায় আগ্রহী ক্রেতারা দর হাঁকাতে থাকেন। নিলামের শুরুতে দর খুব একটা না উঠলেও রোববার সকাল থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে দর উঠতে থাকে। বিশেষ করে শেষ ঘণ্টায় প্রচুর মাশরাফিভক্ত বিড করেন। শেষ দশ মিনিটে ৩০ লাখ টাকা থেকে বেড়ে সেটা দাঁড়ায় ৪২ লাখে। শেষ পর্যন্ত ওই দামেই বিক্রি হয় ব্রেসলেটটি।
অবশ্য ক্রেতারা এটি মাশরাফিকে উপহার হিসেবে ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ লিজিং এন্ড ফাইন্যান্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে মুমিনুল ইসলাম মাশরাফির উদ্দেশে বলেছেন, ‘অ্যাসোসিয়েশনের সবাই একবাক্যে রাজি হয়ে গেছে। একটা ভালো কাজে যদি ব্যয় হয় এবং বাংলাদেশের অধিনায়ককে যদি সম্মান জানানো যায়, এর চেয়ে ভালো কিছু আর হয় না। আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আপনাকে বড় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এটা উপহার দেবো।’
বাংলাদেশে লিজিং এন্ড ফাইন্যান্স অ্যাসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাশরাফি বলেছেন, ‘ধন্যবাদ মুমিন ভাই, আপনি অনেক কিছু করেছেন। আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আপনাকে এটা দিতে আমার বিন্দুমাত্র খারাপ লাগবে না। আপনারা যেহেতু আমাকে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এটা উপহার দিচ্ছেন, ততদিন পর্যন্ত আমি এটা খুলে রাখবো।’
জানা যায়, ক্যারিয়ারের শুরু থেকে অবশ্য এই ব্রেসলেটটি পরতেন না মাশরাফি। শুরুতে বাংলাদেশ লেখা রিস্ট ব্যান্ড পরলেও কিছুদিন পর ধাতব ব্রেসলেটটি পরা শুরু করেন। ব্রেসলেটটিতে মাশরাফির নাম খোদাই করা আছে। শুরুতেই দুঃখ প্রকাশ করেন মাশরাফি।
দেড়যুগের সঙ্গী ব্রেসলেটের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘বাবার ভয়ে আমি সানগ্লাস ও ব্লেসলেট পরতাম না। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই আমার এই দুটো জিনিসের প্রতি আবেগ ছিল। যখন ক্রিকেট শুরু করি, তখন এই দুটো জিনিস আমি পরার সুযোগ পাই। রূপা বা অন্য কোনও ধাতু নয়, এটি স্রেফ স্টিলের একটা জিনিস। আমার মামা তার দোকান থেকে বানিয়ে দিয়েছিলেন। কয়েকটি ম্যাচ ছাড়া আন্তর্জাতিক সব ম্যাচেই আমার সঙ্গী ছিল এই ব্রেসলেট। বেশিরভাগ ম্যাচেই এটা নিয়ে খেলেছি, অপারেশন আর এমআরআই করা ছাড়া এটা কখনও খুলে রাখা হয়নি। আমার ভালোমন্দ সবকিছুর সঙ্গেই ব্রেসলেটটি জড়িত।’