করোনাভাইরাস ইস্যুতে লকডাউন তুলে নেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো। মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতোই সংস্থাটিতে ‘মতাদর্শগত পক্ষপাতী’ বলে উল্লেখ করে এর কার্যক্রম ব্রাজিল থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট প্যালেসের বাইরে সাংবাদিকদের বোলসোনারো বলেন, ‘আমি আপনাদের বলছি, যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউএইচওকে ত্যাগ করেছে। ভবিষ্যতের জন্য আমরাও বিষয়টা পর্যালোচনা করছি। ডব্লিউএইচও হয় মতাদর্শগত পক্ষপাতহীনভাবে কাজ করবে, আর না হয় আমরা তাদের পরিত্যাগ করব।’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ব্রাজিলে। দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ৪৬ হাজার ছাড়িয়েছে।
ব্রাজিলে মৃত্যুর সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে, যা বৈশ্বিক তালিকায় তৃতীয় সর্বোচ্চ। এই তালিকায় তাদের ওপরে কেবল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।
লাতিন আমেরিকার দেশটিতে করোনাভাইরাসের প্রকৃত পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। পর্যাপ্ত সংখ্যক টেস্ট হলে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ বা এর বেশি গুণ বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপরও অতি ডানপন্থী ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো লকডাউনের ঘোর বিরোধী।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বলসোনারোর করোনাভাইরাসকে গুরুত্ব না দেওয়া জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া কোয়ারেন্টিন তুলে নেওয়ার প্রচেষ্টার কারণে ব্রাজিলের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে তিনি ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, এই সঙ্কটকে কাজে লাগিয়ে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করার চেষ্টা করছেন তিনি।
কয়েকদিন আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার না করার নির্দেশনা দিলেও তা মানেনি ব্রাজিল। যদিও বৃহস্পতিবার এই অবস্থান থেকে সরে এসেছে ডব্লিউএইচও। হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়ে তারা বলেছে, পরীক্ষামূলকভাবে এই ওষুধ ব্যবহারে কোনো বাধা নেই।
তবে এসবের সঙ্গে ডব্লিউএইচও’র প্রতি ক্ষোভ প্রকাশের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানালেন বোলসোনারো। বরং যুক্তরাষ্ট্র সংগঠনটি থেকে বার্ষিক ৪০ কোটি ডলার অনুদান সরিয়ে ঘোষণা দেওয়ার পর তাদের টনক নড়েছে বলে দাবি তার।