ঢাকা শহরে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনোমিস্ট। তবে এ প্রতিবেদনে আইসিডিডিআরবি’র কর্মকর্তা জন ডি. ক্লেমেন্সের বক্তব্য অপ্রাসঙ্গিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে আইসিডিডিআরবি।
দ্য ইকোনোমিস্টের খবরে বলা হয়, ঢাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৭ লাখের মতো হতে পারে। ‘ইনফেকশন্স আর রাইজিং ফাস্ট ইন বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া অ্যান্ড পাকিস্তান’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অধ্যাপক জন ডি ক্লেমেন্সের বক্তব্য নেওয়া হয়।
তবে গতকাল শনিবার আইসিডিডিআরবি’র পক্ষ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দ্য ইকোনমিস্টে ছাপা হওয়া জন ক্লেমেন্সের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দ্য ইকোনোমিস্টের প্রতিবেদনে আইসিডিডিআরবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. জন ক্লেমেন্সের মূল বক্তব্য প্রাসঙ্গিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। বাংলাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের পরিমাণ সম্পর্কে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি আইসিডিডিআরবি’র কোভিড ব্যবস্থাপনার দিকটি তুলে ধরেন জানান, কোভিড মহামারির শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি কর্মীদের কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখে। জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ থাকলে কর্মীদের ২৪ ঘণ্টার হটলাইনের মাধ্যমে স্টাফ ক্লিনিকে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। যাদের এসব উপসর্গ দেখা দিয়েছে, তাদের নিজস্ব ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। আর যারা কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি আইইডিসিআরের সহায়তায় আইসোলেশন ও কন্টাক্ট ট্রেসিং নিশ্চিত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, মহাখালীর আইসিডিডিআরবি ক্যাম্পাসে প্রায় ২ হাজার কর্মী নিয়োজিত। তাদের ৪ থেকে ৫ শতাংশ সংক্রমিত হয়েছেন, যদিও আইসিডিডিআরবি ক্যাম্পাস থেকে তাদের সংক্রমিত হওয়ার নজির পাওয়া যায়নি। গোটা ঢাকা শহরে করোনাভাইরাসের যে সংক্রমণ, আইসিডিডিআরবি কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার হার তার প্রতিনিধিত্ব করে না। এই হারকে সরলীকরণের মাধ্যমে গোটা ঢাকা শহরের জন্য প্রযোজ্য বিবেচনা করাটাও যৌক্তিক নয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তারপরও ঢাকা শহরের মোট জনগোষ্ঠী এখানকার কর্মীদের মতো ৪ থেকে ৫ শতাংশ হারে আক্রান্ত হয়েছে বলে যদি ধরে নেওয়া হয়, তাহলে ঢাকা শহরের কমপক্ষে সাড়ে ৭ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবেন বলে হিসাবে পাওয়া যাবে।
দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, বাংলাদেশে সরকারিভাবে করোনায় আক্রান্তের যে সংখ্যা জানানো হচ্ছে প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়েও অনেক বেশি। কম পরীক্ষার অর্থই হচ্ছে প্রকৃত চিত্র আরও বেশি খারাপ হতে পারে।
সরকারি হিসাবে, শনিবার পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩ হাজার ২৬ জন। এদের প্রায় অর্ধেকই ঢাকার। আর ভাইরাসটিতে গতকাল পর্যন্ত মারা গেছে ৮৪৬ জন।