“পরিশ্রমে ধন আনে, পূর্ণে আনে সুখ, অলসতা দারিদ্রতা, পাপে আনে দুখ” এই বাণীকে পুজি করে মেধা ও কৃষি বিভাগের পরামর্শে বেগুন চাষ করে বাজিমাত করেছে রংপুরে কাউনিয়া উপজেলার খোপাতি গ্রামের দুগ্ধ খামারী আ. হাকিম।
সরেজমিনে খোপাতি গ্রামে গিয়ে কথা হয় সফল বেগুন চাষি আ. হাকিমের সাথে। তিনি জানান, কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে ৩০ শতক জমিতে বেগুন চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছে। এক সময় আঃ হাকিম এলাকায় গরুর খামারী হিসেবে পরিচিত ছিল। দুধের দাম কম, খাদ্যে ও ঔষধের দাম বেশী, এমতাবস্থায় খামার নিয়ে জটিলতায় পড়েন আঃ হাকিম। পরিবারের লোকজন নিয়ে জীবন ধারন করা বেশ কষ্ট সাদ্য হয়ে পড়ে। খামার টিকিয়ে রাখতে স্ত্রীর পরামর্শে বাড়ির পার্শ্বের পতিত ৩০ শতক জমিতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে বেগুন, লাউ ও নানা জাতের শাক সবজি চাষ শুরু করেন।
চলতি মৌসুমে তার জমিতে বেগুন উৎপাদন করে এলাকার মানুষকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ইতোমধ্যেই সে বেগুন বিক্রয় করে প্রায় ৬৫ হাজার টাকা আয় করেছে।
আ. হাকিম জানায়, বেগুন চাষে তার চারা, জমি চাষ, শ্রমিক, সেচ, কিটনাশক, বেড়া ও নেট সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। তিনি এপর্যন্ত বেগুন বিক্রয় করেছে ৬৫ হাজার টাকার এবং আশা করছেন মৌসুমের শেষ পর্যন্ত বেগুন বিক্রয় করবে আরও ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার। বেগুন চাষে সমস্যার মধ্যে তিনি জানান কান্ডপচা, কদমা, ফলপচা, ও ছিদ্র পোকার উপদ্রব বেশী। বেশী সমস্যা হয় কান্ডপচা ও ফল পচা রোগ। বাজারে যে সব ঔষধ পাওয়া যায় অনেক সময় তা ২নম্বর হওয়ায় ভাল কাজ হয় না। আর মৌসুমে যে পরিমান বেগুন হয় তা সংরক্ষণের জন্য কোন সবজি ক্লোড স্টোর নাই। বেগুন তুলে তিনি ফুল কপি ও বাঁধা কপি ও শষা চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন। হলদী বাড়ী ব্লকের উপ সহকারীকৃষি কর্মকর্তা জানান খোপাতি গ্রামে আঃ হাকিমসহ প্রায় ৪৫-৫০ জন চাষি উন্নত জাতের বেগুন ও কলা চাষ করেছে। ইতোমধ্যে খোপাতি গ্রামটি বেগুন গ্রাম হিসেবে এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। সেই সাথে আ. হাকিম বেগুন চাষ করে বাজিমাত করে এলাকর মানুষকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
তিনি এখন গরুর খামারী থেকে সফল সবজি চাষি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে এলাকার মানুষের কাছে।
কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আলম জানান খোপাতি গ্রামের মাটি সবজি চায়ের উপযোগি। খোপতি গ্রামের চাষিদের ধানের পাশাপাশি বিষ মুক্ত সবজি চাষে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এলাকার কৃষকের জন্য তার অফিসের দড়জা সব সময় খোলা, যখন খুশি তখন এসে চাষি পরামর্শ নিতে পারবে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড, সারোয়ারুল হক জানান শীতকালিন সবজির এখন মৌসুম । ৮ উপজেলায় ও সিটি করপোরেশন এলকায় এ বছর সবজি আবাদের টার্গেট করা হয়েছে ১২হাজার ৫শ ৮৫ হেক্টর জমিতে।