কুড়িগ্রামের উলিপুরে এবারে তিসি চাষ এর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছে কৃষকরা। অনুকূল আবহাওয়া ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। এবারে তিসি চাষে প্রাকৃতিক কোনো বিরূপ পরিস্থিতির মুখে পরতে হয়নি চাষিদেরকে। তাই বিভিন্ন অঞ্চল ও নদ-নদীর বিস্তৃর্ণ চর সমূহে তিসির ব্যাপক চাষাবাদ হয়েছে। কিছুদিন পর কৃষকরা মাঠ থেকে ফসল কাটা ও মারাই কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন।
উপজেলার ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদ-নদীর আববাহিকার মুসার চর, মশালের চর, মতুয়াতলী, বানাডোবা, আক্কেল মামুদ ও কর্পুরাচরের বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে মহা সমারোহে এ ফসল চাষ করায় তিসি ফলনে ঘটেছে শস্য বিপ্লব। কম খরচে ভালো দাম পাওয়া যায় বলে এ ফসল চাষে উৎসাহী হন কৃষকরা। এজন্য স্বপ্ল মেয়াদী আউশ ধান কেটে তারা শীতকালীন এ ফসল চাষ করেন। এবারে অতিবৃষ্টি ও বন্যায় আউশ ধান তেমন সুবিধে না হলেও শস্য জাতীয় (তৈলপ্রদ বীজ বিশেষ) এ ফসলের বাম্পার ফলনে কৃষকেরা সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার স্বপ্ন দেখছেন। বিঘা প্রতি জমিতে ৫ থেকে ৬ মণ তিসি ফলন পাওয়া যাবে বলে চাষিরা জানান। যার বর্তমান বাজার মূল্য মণপ্রতি ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা।
এবারে দেশী ও উচ্চ ফলনশীল উভয় জাতের তিসি চাষ হয়েছে। এর গাছ ফলন পর্যন্ত দুই থেকে তিন ফিট লম্বা হয়। রোপণের পর জাত ভেদে আড়াই/তিন মাসের মধ্যে তিসি ঘরে তোলা যায়। তবে পলি ও দোয়াশ জমিতে এর আবাদ ভালো হয়। কৃষকরা জানান, তিসি চাষে সাধারণত জৈব সার বেশী ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া তিসি শীতকালীন ফসল হওয়ায় কীট-পতঙ্গের আক্রমণ তেমন একটা হয় না। ফলে কম খরচে আশাব্যঞ্জক উৎপাদন করা যায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার জানান, উলিপুরের চরাঞ্চলে এর চাষ বেশী হয়ে থাকে। এ বছর তিসি আবাদ ভাল হয়েছে। রোগ-বালাই না থাকায় ও অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় এবছর তিসি চাষ করেই প্রত্যাশিত ফলন পাওয়া যাবে। এবার বাম্পার ফলনে কৃষকদের মুখে এখন খুশির ঝলক লক্ষ্য করা যাচ্ছে।