বিশ্ব ভালোবাস দিবস পালিত হয়েছে গতকাল শুক্রবার। দিবসটি উপলক্ষে অনেকে তার প্রিয় মানুষটির কাছ থেকে উপহার বা ফুলেল শুভেচ্ছা পেয়ে থাকেন। তবে সেই ফুলেল শুভেচ্ছা যদি কোনো মৃত মানুষের কাছ থেকে আসে, তাহলে একটু অবাক হওয়ারই বিষয়।
বাস্তবে এমনটি ঘটেছে, আট বছর ধরে মৃত স্বামীর কাছ থেকে ভালোবাসা দিবসে ফুল উপহার পেয়ে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা ট্রেসি। মৃত্যুর পরও স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের এই অভিনব ব্যবস্থা করে গেছেন তার স্বামী।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ট্রেসির স্বামী রিচ কক্স মারা যান ২০১২ সালে। এর পরের বছর ২০১৩ সালে ভালোবাসা দিবস ও জন্মদিনে ফুল উপহার পেয়ে চমকে যান ট্রেসি। ভালোবাসা দিবসেই ট্রেসির জন্মদিন। এজন্য উপহারের সঙ্গে জন্মদিনের শুভেচ্ছাও থাকে।
তিনি জানতে পারেন, রিচ নিজের মৃত্যুর পরও স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের এই অভিনব ব্যবস্থা করে গেছেন।
প্রথমবার উপহার পেয়ে স্বামীর প্রগাঢ় ভালোবাসা আন্দোলিত করেছিল তাকে। এরপর থেকে নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটেনি। আট বছর ধরে প্রতিটি জন্মদিন আর ভালোবাসা দিবসে মৃত স্বামীর কাছ থেকে একইভাবে উপহার পাচ্ছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার সিএনএনকে ট্রেসি বলেন, ‘অনুভূতিটা দুঃখের। কিন্তু একইসঙ্গে আনন্দের। কারণ আমার মনে হয়, রিচ সব সময় আমার সঙ্গে আছে।’
প্রতিবছর ফুলের সঙ্গে নতুন চিরকুট থাকে স্বামী রিচের পক্ষ থেকে। এ বছর ভালোবাসা দিবসের চিরকুট ছিল এ রকম, ‘শুভ জন্মদিন ও ভালোবাসা দিবস। ভালোবাসা, রিচ।’
২৬ বছরের বিবাহিত জীবন ছিল ট্রেসি আর রিচের। ট্রেসি বলেন, ‘রিচ যত্নশীল, আবেগপ্রবণ মানুষ।’
তিনি বলেন, ‘যখনই আমি ফুল পেতাম, আমি আনন্দে কেঁদে ফেলতাম। আমাকে এই আনন্দ দিতেই রিচ এ রকম ব্যবস্থা করে গেছে।’
ট্রেসি আরও বলেন, ‘রিচের এই উপহার আমাকে আমাদের একসঙ্গে কাটানো সব সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়।’
৫৩ বছর বয়সে গলার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান রিচ। ট্রেসির বয়স এখন ৬৩ বছর। তিনি কেন্টাকির জর্জটাউনে বসবাস করেন।
ট্রেসির মেয়ে বেথানি বলেন, বাবা তাকে ও তার তিন ভাইবোনকে এই গোপন পরিকল্পনার কথা জানিয়ে গিয়েছিলেন। তারা জানেন না, কীভাবে এই উপহার আসে। তবে জানেন, এই উপহার আসা বন্ধ হবে না।