রোদ আর বালিকা
সকালের ঢালা রোদ
অবিরত খেলে দোল
ঝিলিমিলি মধুময় স্বপ্নে।
ফুটল হেসে হৃদয়েতে
জোয়ারেতে রাঙা ঠোঁটে
বালিকার প্রেমময় গপ্পে।
সাদা সাদা পায়রাগুলো
বালিকাটি পেয়ে যায়
চারিদিকের জয়-জয়কারে।
ফুল ভরা সাজি নিয়ে
সোনারোদে নেচে নেচে
ধেয়েই চলে ঝংকার তুলে।
বালিকাটির বুকে যেন
প্রজাপতি উড়ে যায়
মধুমাখা প্রীতির মৌবনে।
ফাগুনের ঝিকিমিকি
চারিদিকে দোলা লাগে
গীতিময় জোয়ার যৌবনে।
ফুল আর বালিকাটি
রোদ আর প্রজাপতি
প্রণয়ের বসন্ত খেলায়।
রেখেছি তার কথা
আমি কিন্তু রেখেছি তার কথা
যে-কথা হয়েছিল নির্জনে
ফুলে-ফলে ভরা ছিল মাঠ
প্রজাপতি উড়ছিল মৌবনে
মাথার উপর দাঁড়িয়েছিল মাঠ
কথাগুলো সানাই হয়ে যায়
হৃদয়জুড়ে গোলাপ কলি ফোটে
সারা শরীর ভোরের আলো ছড়ায়।
জোছনার আঁচল
রাত্রির গায়ে জড়িয়েছিল জোছনার আঁচল।
এই যে আঁচল কে ধরেছিল?
এবং একটি ফড়িং
আঁচলের ভাঁজে ভাঁজে এঁকেছিল রঙিন আলপনা।
মাতাল প্রজাপতি
রাতের আলোয় আলপনায় খুঁজেছিল প্রণয়।
পাখিদের নীরবতায়
নির্জন ছিল রাত্রির কুসুম।
কাঁপা কাঁপা স্বরে পুড়ে গেল
জোছনার আঁচলখানি
আর মনে হলো রাত্রিভোরে সেজেছিল
প্রসন্ন স্বপ্নের বাসরকুঞ্জ।
আলোর নাচন
রাত্রির গহন ভেঙে আঁধার ছড়িয়ে পড়ে
আলোময় মাঠ-প্রান্তরে।
থেমে যায় মমতার বাঁধন, হাসির বন্যা,
পাখিদের কলকোলাহল।
বিরাণ হয়ে পড়ে শ্যামলিমা মাঠ।
ফোটে না ফুলের কলি, পুকুরের জল,
ঊর্বশীর বুক, আকাশের নীল।
তবুও আলোর নিশান নিয়ে
জেগে থাকি আলোহীন পৃথিবীতে
দু’চোখে জলের ঢেউয়েÑ
যদি আসে আলোর ফোয়ারা...
নীল অভিমানে
আদ্যনাথ ঘোষ
হলুদ চোখের কোণে আজ
সাজানো পৃথিবী ফ্যাকাশে দেখায়।
সবখানে মৃত্যু মিছিল করে
হাজারে হাজারে, অযুতে অযুতে
অনুজীব করোনার থাবা
মানুষের বুকফাটা কান্না, চোখ আজ দেখে না কিছুই
দেখে জীবনের সীমারেখা
অথবা পেটের জ্বালা সংসারে, সবখানে।
কে দেয় আশার বাণী, কে- বা জাগরিত
এতো যে উঠোনের আদর, এতো যে স্বপ্নের সোনালিমা
কেড়ে নিল নীলবিষ পুতনা
করোনা ভাইরাসÑ মরণ কামড়।
এতো এতো ভালোবাসা, এতো এতো ¯েœহের বাঁধন
এতো যে বুকভরা প্রত্যয়, বিশ্বাস
সবকিছু মলিন, আঁধারÑ সবখানে।
আমার আঙিনা জুড়ে ফুলের বাগান
সেও আজ কেঁদে কেঁদে ঘুমিয়ে পড়েছে।
আমার প্রাণের স্রোতস্বিনী নদী
আমার চারপাশে ঘুরে ঘুরে
কালো বাতাস ডানায়
আমাকে ফেলে রেখে চলেই গেছে
অনাদরে নীল অভিমানে।