বুকে বিভিন্ন কারণে চাপ অনুভব হতে পারে। যেমন- শ্বসনতন্ত্রের কারণে চাপ অনুভূত হতে পারে। শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি, শ্বাসনালির প্রদাহ, সিওপিডি, ফুসফুস ঝিল্লির প্রদাহ ও বাতাস জমা, ফুসফুসে পানির আধিক্য, ফুসফুসে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, শ্বাসনালিতে কোনো কিছু ঢুকলে। আরও যেসব কারণে এ সমস্যা হয়ে থাকে, তা হলো-
হৃদযন্ত্রের কারণে : বুক ধড়ফড়, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, জন্মগত হৃদযন্ত্রের ত্রুটি, হৃদযন্ত্রের রক্তনালি সংকোচন ইত্যাদি।
রক্তনালির সমস্যায় : মহাধমনির দেয়াল ছিঁড়ে গেলে (অ্যায়োরটিক ডিসেকশন), মহাধমনির দেয়াল প্রসারিত হলে (অ্যায়োরটিক অ্যানুরিজম)।
খাদ্যনালির সমস্যা : খাদ্যনালির নিচের অংশ চিকন হয়ে যাওয়া, খাদ্যনালির সংকোচন, বুকজ্বালা, খাদ্যনালির প্রদাহ।
বুকের হাড়ে সমস্যা : অতিরিক্ত ব্যথার ওষুধ সেবন, দুশ্চিন্তা, উৎকণ্ঠা এবং উদ্বেগ থেকে অনুভূত হতে পারে বুকে অস্বস্তিকর চাপ।
রোগের ধরন : চাপবোধ করা, ব্যথা হওয়া, ভারী লাগা, খোঁচা মেরে ধরা ইত্যাদি। এ ধরনের সমস্যা কখনো বেশি হয়। খাবার গ্রহণের সঙ্গেও সম্পর্ক থাকে। মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তায় আক্রান্তের কারণেও হতে পারে।
যা জানা জরুরি : আক্রান্ত ব্যক্তির পেশাগত ইতিহাস, পোষাপ্রাণী পালনের ইতিহাস জানতে হবে। রোগীর ধূমপান, মদ্যপান এবং পান-সুপারি বা জর্দা খাওয়ার ইতিহাস জানতে হবে। রোগীর সাধারণ, শ্বাসতন্ত্র এবং হৃদযন্ত্রের শারীরিক পরীক্ষা করতে হবে। রোগ সুচারুভাবে নির্ণয় করার জন্য শারীরিক পরীক্ষা ছাড়াও কিছু রুটিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যেতে পারে।
চিকিৎসা : আক্রান্ত ব্যক্তির সঠিক রোগ নিরূপণের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পান খাওয়া, ধূমপান করা বা মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে তা ছেড়ে দেওয়ার উপদেশ দিতে হবে। কোনো পোষাপ্রাণী পালন বা পেশাগত কারণে যদি ওই সমস্যা হয়ে থাকে, তা পরিবর্তন করার জন্য পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে।
রোগীকে উপযুক্ত স্বাস্থ্য শিক্ষা দিতে হবে এবং প্রয়োজনে বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ বুকে চাপবোধ করা একটি সাধারণ উপসর্গ মনে হলেও এর আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে প্রাণঘাতী কোনো মারাত্মক রোগ। মানসিক সমস্যার কারণে ওই সমস্যার সৃষ্টি হলে তার উপযুক্ত চিকিৎসা এবং তাকে আশ্বস্ত করা যেতে পারে।
লেখক : বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ
ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার, লালবাগ, ঢাকা। ০১৭৮৩৩৫৬০৪৮