হেমন্তিকা

সবুজ পাতার খামের ভেতর
হলুদ গাঁদা চিঠি লেখে
কোন পাথারের ওপার থেকে
আনলো ডেকে হেমন্তকে?
হেমন্ত নিয়ে কবি সুফিয়া কামালের এ জিজ্ঞাসা আজও শেষ হয়নি। যদিও এখন আকাশে নেই পেঁজা তুলোর মতো ছন্নছাড়া মেঘভার। শিল্পীর তুলিতে আঁকা দুঃখের মতো আকাশের নীল রংটি আরও গভীর হয়ে উঠেছে। এই নীল আকাশ, রাতে কুয়াশার বলিরেখা, ভোরের শিশির নিশ্চিতভাবে জানিয়ে দিচ্ছে প্রকৃতিজুড়ে আবার এসেছে হেমন্ত। 
শীতকে আমন্ত্রণ জানানোর অপেক্ষায় প্রহর গুনতে থাকা হেমন্তকালের দুটি মাস কার্তিক ও অগ্রহায়ণ নানা আয়োজনের পসরা সাজিয়ে বসে। ভোরের আকাশের কুয়াশার চাদরে উঁকি দেয় ঝলমলে সকাল, শিউলীতলায় ছোট্ট শিশুর গাঁথা ঝরা ফুলের মালা, নবান্ন উৎসবে ধোঁয়া তোলা পিঠা-পুলি, ধান শালিকের গান যেন এ আয়োজনে যোগ করে বাড়তি আবেদন। হেমন্ত আসে কৃষকের ঘরে নবান্নের উৎসব হয়ে। বাংলার চিরাচরিত সবুজের বুকে মাঠভরা সোনারঙের যেন বান ডেকেছে। শরতে বোনা ধান সোনা হয়ে ঘরে উঠবে, এ স্বপ্ন বুকে নিয়ে ভরে ওঠে কৃষকের গোলা। কৃষানির অঙ্গে শোভা পায় নতুন শাড়ির আঁচল, পায়ের পাতায় আলতার রঙে স্বপ্ন বুনে রাখে, হেমন্তের স্বপ্ন। 
যে শান্ত স্নিগ্ধ রূপ নিয়ে হেমন্তের দিন শুরু হয়, গোধূলি বেলার হিম বাতাসে সে স্নিগ্ধ আবহ ক্রমেই হারিয়ে যেতে থাকে। তখনই সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে একরাশ ভেজা শিশিরের উল্লাস হয়ে। পূর্ণিমার রাতে সেই শিশির হীরার দানার মতো জেগে থাকে ঘাসের ডগায়, গাছের পাতায় কিংবা রাতের ফুলে। ময়াবী এ দৃশ্য কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল বলেই হয়তো তার মন গেয়ে উঠেছিলÑ 
‘হিমের রাতে ওই গগনের দীপগুলিরে
হেমন্তিকা করল গোপন আঁচল ঘিরে।
ঘরে ঘরে ডাক পাঠালোÑ ‘দীপালিকায় জ্বালাও আলো,
জ্বালাও আলো, আপন আলো, সাজাও আলোয় ধরিত্রীরে।’
রূপসী বাংলার কবি জীবননান্দ দাশ যেন হেমন্তপুত্র। তার কবিতায় মিশে আছে হেমন্ত একাকার হয়ে। তাই হয়তো সেই হেমন্তেই বিদেহী হয়েছিলেন তিনি। আবার হেমন্তে মুগ্ধ হয়ে এ কার্তিকে নবান্নের দেশে বারবার ফিরে আসতে চেয়েছিলেন। কবির এ আকুলতা সত্ত্বেও চলে যায় একেকটি হেমন্ত আবার আসে ফিরে ফিরে নতুনের ডাক দিয়ে। 
কার্তিকের এ অলস বিকাল শেষে সন্ধ্যার রক্তিম আলোর দিশা পেয়ে আবার হেমন্ত ফিরে আসুক একঝাঁক টিয়ার সমগ্র চিৎকারের মতো আমার বাতায়নে।


নৈসর্গ, পাহাড় ও নদীর কবি
কবি ও কথাসাহিত্যিক আফিফ জাহাঙ্গীর আলির জন্মদিন পহেলা জানুয়ারি। ১৯৭৮
বিস্তারিত
এলোমেলো
মনে করো কেউ তোমাকে ডাকেনি,  অথচ তুমি শুনতে পাচ্ছো অতল
বিস্তারিত
বুড়ি চাঁদ
সুগন্ধি রোমাল হাতে         তুমি মেপে গেলে ষাঁড়ের
বিস্তারিত
প্রেমিক হতে পারি না আজকাল
প্রেমিকার উষ্ণ চুম্বনে কৃষ্ণগৌড় ঠোঁটে  ভেসে ওঠে শোষিত মানুষের রক্তের দাগ! 
বিস্তারিত
এ মাটি
এ মাটি আমাকে দিয়েছে জীবনের যতো গান, বাতাসে রৌদ্রের ঝিলিমিলি প্রজাপতি
বিস্তারিত
নোনাজলের ঢেউ
যাবতীয় আয়োজন শেষে কত ভেঙেছি  এ নদীতে নোনাজলের মিছিলের ঢেউ  শব্দবাণে
বিস্তারিত